Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে অনীহা

সড়কে চলাচলকারী সবাইকেই সড়ক আইন জানতে হবে এবং মেনে চলতে হবে : শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

ঢাকা শহরের পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ফুটওভার ব্রিজ, আছে আন্ডারপাসও। ঢাকা রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে নির্মাণ করা হয়েছে এসব ওভারব্রিজ ও আÐার পাস। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মানুষ রাস্তা পার হচ্ছে। এতে প্রতিদিনই মৃত্যুর ঘটনাসহ ঘটছে ছোট-বড় অনেক দুর্ঘটনা। এছাড়াও রাজধানীর অনেক ব্রিজ অনেকটাই অপরিষ্কার। এসব কারণে এগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। রাস্তা পারাপারের সময় বিপদে পড়ছেন পথচারীরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুটওভার ব্রিজের যে উচ্চতা থাকা প্রয়োজন ঢাকার ফুটওভার ব্রিজগুলোর উচ্চতা তার চেয়ে অনেক বেশি। এ কারণে বিভিন্ন এলাকার ফুটওভার ব্রিজগুলো পথচারীরা ব্যবহারে উৎসাহ পান না। ফুট ওভার ব্রিজ ব্যাবহার না করার আরেকটি বড় কারণ হলো এর অবস্থান। অনেক জায়গায় ওভারব্রিজ দূরে থাকায় পথচারীরা নিচ দিয়ে পার হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেব্রা ক্রসিং, ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস দিয়ে রাস্তা পার হন। যেখানে এসব ব্যবস্থা নেই সেখানে প্রথমে ডানে, পরে বামে, তারপর আবার ডানে ভালো করে দেখে নিরাপদ মনে হলে রাস্তা পার হন মাইকে স্বেচ্ছাসেবীদের এমন সতর্কবাণী উপেক্ষা করে চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হচ্ছেন কর্মব্যস্ত মানুষ। ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারের অনুরোধে কেউ বিরক্ত হচ্ছেন, কেউ আবার জড়াচ্ছেন তর্কে। কেউ আবার ফোনে কথা বলতে বলতেই বেখেয়ালিভাবে সড়ক পার হচ্ছেন।

গতকাল রোববার সড়কে মানুষের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে সচেতনতা কর্মসূচির মাঝেই এমন চিত্র দেখা গেল রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায়। জোর করেও যেন সাধারণ মানুষকে সড়ক পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করানো যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, নারী, বৃদ্ধ এমনকি শিশুরাও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে চাইছেন না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। পাঁচ দিনব্যাপী রাজধানীর চারটি পয়েন্ট (মৎস ভবন, মালিবাগ, বাংলা মোটর ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবীরা মোটরযান, গণপরিবহন চালক, যাত্রী ও পথচারীদের সচেতন করতে কাজ করছেন। প্রথমদিনের এই কার্যক্রমে সহযোগিতা করছেন রেড ক্রিসেন্ট ও বাংলাদেশ স্কাউটসের সদস্যরাও।

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী পরিষদের নির্বাহী সদস্য জামাল হোসেন মÐল বলেন, সড়কে সাধারণ মানুষের চলাচল নিরাপদ করতে দীর্ঘদিন ধরেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তারই ধারাবাহিকতায় সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা চলন্ত গাড়িতে যাত্রীদের ওঠানামা না করতে ও পণ্যবাহী মোটরযানে যাত্রী হয়ে না উঠতে সচেতন করছেন।

তিনি বলেন, পথচারীরা যেন দৌড়ে অথবা মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার না হয় এবং চলাচলের সময় ফুটপাথ ব্যবহার ও ফুটপাথবিহীন রাস্তার ডানপাশ দিয়ে সাবধানে চলে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে। অনেকেই বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছেন, আবার অনেকে তর্ক করছেন। তবে আমরা সবসময়ই সাধারণ মানুষজনকে অনুরোধ করছি যেন তারা সড়ক আইন মেনে চলাচল করেন।

বিআরটিএর পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, আমাদের এই কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো সাধারণ মানুষকে সচেতন করা। সড়কে চলাচলকারী সবাইকেই সড়ক আইন জানতে হবে এবং মেনে চলতে হবে। স্বেচ্ছাসেবীরা গতিসীমা মেনে চলা, বেপরোয়া ও অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি না চালানো, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তাসহ সড়ক আইন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন করছেন। আশা করি সবাই এসব মেনে চললে সুন্দর সড়ক ব্যবস্থাপনা সম্ভব হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ