Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় কারিকুলামে ইসলামী শিক্ষার রূপরেখা

জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা : আমাদের ভাবনা-৮

ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান কাঠামোর মধ্যেই সামান্য সংশোধন, সংযোজন বিয়োজন করে ইসলামী শিক্ষার রূপরেখা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। ২০১০ সালে নাস্তিক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ যখন একটি নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের কৌশলি পরিকল্পনা নেন এবং ২০১২ সালে তাদের দীর্ঘকালের পরিকল্পিত ইসলামের বিরুদ্ধে কামানটি আওয়ামী লীগের কাঁধে বন্দুক রেখে দাগাতে সক্ষম হয় তখন জাতীয় পত্রপত্রিকায় একাধিক লেখার মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেছি। কীভাবে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী শিক্ষার রূপায়ন সম্ভব হবে তার সহজ পথটি পরিষ্কার করেছি। আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব মরহুম প্রফেসর সৈয়দ আলী আশরাফ সাহেবের একটি চিন্তাধারা ছিল ইসলামাইজেশন অব নলেজ। বিষয়টি আমার কাছে সহজবোধ্য ছিল না। জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া আয়োজিত একটি সেমিনারে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেই সেমিনারে আমি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছিলাম এবং তার সঙ্গে মতবিনিময়ের একটি সুযোগ হয়েছিল। আমি তার আরাধ্য বিষয়টিকে জ্ঞানের ইসলামায়ন না বলে শিক্ষার ইসলামায়ন বলতে চাই। আর তা অর্জনের পথ হচ্ছে-

বর্তমানে ইন্টারমিডিয়েট বা কলেজের দু’বছরের পাঠ গ্রহণ শেষে ছাত্ররা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তাদেরকে প্রথমেই দুটি ফাউন্ডেশন কোর্সে বাংলা ১০০+ ইংরেজি ১০০= ২০০ নম্বরের পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে হয়। এ পরীক্ষা ও উত্তীর্ণ হওয়া ম্যান্ডেটরি। তারপরেই অনার্সের অন্যান্য সাব্জেক্টে পড়ার ও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাব হল, যে কোনো সাব্জেক্টে অনার্স পড়ার পূর্বশর্ত হবে বাংলা ইংরেজির সঙ্গে বাধ্যতামূলকভাবে ১০০ নম্বরের ইসলামিক স্টাডিজ বা অমুসলিমদের জন্য তাদের ধর্মতত্ত¡ পাঠ করা।

কুরআন, হাদীস, ফিকাহ, ইসলামের ইতিহাস, বাংলাদেশের মুসলিম ঐতিহ্য, আকিদা বিশ্বাস প্রভৃতি এ ফাউন্ডেশন কোর্সের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এরপর অনার্সের প্রত্যেকটা বিষয়ে প্রচলিত সিলেবাস ও পাঠ্যক্রমের সাথে ৫-১০টি কোর্সে ইসলামী বিষয়ের ওপর পাঠদান ও পরীক্ষা হবে। উদাহরণস্বরূপ, ডাক্তারি পাশ করার জন্য ধরুন ১০০টি কোর্স পড়তে ও পরীক্ষা দিতে হয়। সেখানে আর ১০টি কোর্স যোগ করতে হবে ইসলামী বিষয়ে। যেমন কুরআন শরীফে চিকিৎসাবিষয়ক নির্দেশনা, হাদীস শরীফে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সচেতনতাবিষয়ক প্রণোদনা, মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের জীবনী, চিকিৎসা শাস্ত্রে ইসলামী ঐতিহ্য প্রভৃতি। যারা ক্যাডেট বা সমরবিদ্যা বিষয়ে পড়াশুনা করবে তাদেরকে জেনারেল সব্জেক্টগুলোর অতিরিক্ত কয়েকটি ইসলামী বিষয় পড়ানো হবে। যেমন কুরআন মজীদে যুদ্ধ সংক্রান্ত আলোচনা, হাদীস শরীফের আলোকে ইসলামী যুদ্ধনীতি, বদর, উহুদ, খন্দক প্রভৃতি যুদ্ধের ইতিহাস ও শিক্ষা, মুসলিম সেনাপতিদের জীবন চরিত ইত্যাদি। উপরোক্ত নিয়মে যদি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনারেল সাব্জেক্টগুলো সাজানো যায় তাহলে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামী শিক্ষার রূপায়ন সম্ভব ও সহজ হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ