Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইউক্রেনে আধুনিক ট্যাঙ্ক পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা বাড়বে, হুঁশিয়ারি জার্মানির বিরোধী নেতার যুক্তরাষ্ট্রও জানে যে ইউক্রেন পরাজিত হবে: সাবেক মার্কিন উপদেষ্টা কিয়েভে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয়ার কথা ভাবছে ইউরোপ, দ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:২৪ এএম

কয়েকমাস যাবত গড়িমসির পরে আমেরিকা এবং জার্মানি ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য ট্যাঙ্ক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন অন্তত ৩০টি এম ওয়ান আব্রামস ট্যাঙ্ক পাঠানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ অন্তত ১৪টি লেপার্ড টু ট্যাঙ্ক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এসব ট্যাঙ্ক ইউক্রেনের হাতে আসলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যেতে পারে বলে তারা আশা করছে। তবে আমেরিকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত এসব খবরকে ‘সরাসরি উস্কানি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ট্যাঙ্ক যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার কাছে হারানো এলাকা পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করবে। ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক পাঠনোর জন্য আমেরিকা এবং জার্মানি এতোদিন ধরে দেশের ভেতরে এবং বাইরে নানা চাপ উপেক্ষা করেছে। ওয়াশিংটন বলছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আব্রামস ট্যাঙ্ক পরিচালনার জন্য ব্যাপক প্রশিক্ষন এবং রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। অন্যদিকে বার্লিন আশংকা করছে ট্যাঙ্ক সরবরাহের মাধ্যমে নেটো রাশিয়ার বিপক্ষে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম বলছে, জার্মানির তরফ থেকে আমেরিকাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছিল যে আমেরিকা যদি এম ওয়ান আব্রামস ট্যাঙ্ক ইউক্রেনে পাঠায় তাহলে জার্মানিও লেপার্ড টু ট্যাঙ্ক পাঠাবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ৩০টি ট্যাঙ্ক পাঠানো হতে পারে। ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর এবং বাইডেনের সহযোগী ক্রিস কুনস সংবাদ মাধ্যম পলিটিকোকে বলেন, ‘যদি জার্মানরা বলে যে, আমেরিকানরা আব্রামস পাঠালে তারা লেপার্ড পাঠাবে তাহলে আমাদের আব্রামস পাঠানো দরকার।’

ব্রিটেন এরইমধ্যে বলেছে যে তারা ইউক্রেনে চ্যালেঞ্জার টু ট্যাঙ্ক পাঠাবে। পোল্যান্ড এই সপ্তাহে বলেছে যে, তারা লেপার্ড টু ট্যাঙ্ক ইউক্রেনে পাঠাতে চায়। এসব ট্যাঙ্ক যেহেতু জার্মানিতে তৈরি, তাই বার্লিনকে তাদের রপ্তানির অনুমোদন দিতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের তথ্য অনুসারে, অন্তত ১৬টি ইউরোপীয় ও নেটোভুক্ত দেশের কাছে লেপার্ড টু ট্যাঙ্ক রয়েছে। এদের সবাই ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক পাঠাবে না। কিন্তু শোলৎজের আপাত সিদ্ধান্তের অর্থ হল তারা চাইলেই পাঠাতে পারে।

বিবিসির প্রতিরক্ষা বিষয়ক করেসপনডেন্ট জনাথন বিয়েল বলেন, ইউক্রেন মনে করে ৩০০ আধুনিক ট্যাঙ্ক পেলে তারা যুদ্ধে জিততে পারবে। কিন্তু তাদের প্রয়োজন মতো ট্যাঙ্ক পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে উল্লেখ করেন বিয়েল। কিন্তু যদি আধা ডজন পশ্চিমা দেশের প্রত্যেকে ১৪টি করে ট্যাঙ্ক সরবরাহ করে, তাহলে এটি ট্যাঙ্কের সংখ্যা প্রায় একশর কাছাকাছি নিয়ে যাবে, যা যুদ্ধে পার্থক্য তৈরি করতে পারে। বিয়েল বলেন, যুক্তরাজ্যের চ্যালেঞ্জার টু, জার্মানির লেপার্ড টু এবং মার্কিন তৈরি আব্রামসসহ পশ্চিমা ট্যাঙ্কগুলো সোভিয়েত যুগের একই ধরণের ট্যাঙ্ক যেমন টি-সেভেনটি টুয়ের চেয়ে উচ্চমানের। এই ট্যাঙ্কগুলো ইউক্রেনীয় বাহিনীর সদস্যদের আরও বেশি সুরক্ষা, গতি এবং নির্ভুলতা দেবে।

কিন্তু পশ্চিমা আধুনিক প্রধান যুদ্ধ ট্যাঙ্কগুলি নিজেরাই কোনো বিস্ময়কর অস্ত্র বা গেম-চেঞ্জার নয়। বরং সেগুলোর সাথে অন্য কী ধরণের অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিবিসির প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংবাদদাতা। সাম্প্রতি পশ্চিমাদের সরবরাহ করা ভারী অস্ত্রে পরিবর্তন এসেছে। আরো শত শত সাঁজোয়া যান, আর্টিলারি সিস্টেম এবং গোলাবারুদ সরবরাহ করা হচ্ছে। রাশিয়ানদেরকে প্রতিহত করে পিছু হটিয়ে দখলকৃত এলাকা পুনরুদ্ধারে মিলিতভাবে এ ধরণের অস্ত্রই দরকার।

যদি ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া যায় এবং সময়মতো অস্ত্র সরবরাহ করা হয়, তাহলে তারা আসছে বসন্তে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। আক্রমণাত্মক অপারেশনের জন্য এখনো একটি বিষয় অনুপস্থিত। আর সেটি হচ্ছে আকাশপথে সামরিক শক্তি। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেন পশ্চিমাদের কাছে আধুনিক যুদ্ধবিমান সরবরাহের দাবি জানিয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত কোন কিছুই সরবরাহ করা হয়নি।

কিয়েভে জার্মান ট্যাঙ্ক সরবরাহে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা বাড়বে : জার্মান পার্লামেন্টে বাম রাজনৈতিক দলের প্রধান ডিটমার বার্টস কিয়েভ সরকারকে লেপার্ড ২ ট্যাঙ্ক সরবরাহ করার বিষয়ে জার্মান সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন যে, এটি মানবতাকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে যাবে।
জার্মান সরকারের সিদ্ধান্তকে বিপজ্জনক বলে বর্ণনা করে মঙ্গলবার ডিপিএ নিউজ এজেন্সিকে তিনি বলেন, ‘লেপার্ড যুদ্ধ ট্যাঙ্ক সরবরাহ, যা অন্য একটি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে, ইউরোপকে শান্তির দিকে নয় বরং আমাদেরকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি একে একটি সম্ভাব্য ‘বিপর্যয়ের’ ‘সূচনা’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। কিয়েভ সরকার ট্যাঙ্ক সরবরাহের পরে যুদ্ধবিমান সরবরাহের আহŸান জানাবে হবে, আইন প্রণেতা সতর্ক করেছেন।

জার্মানির ডের স্পিগেল আগে রিপোর্ট করেছিল যে, শোলৎজ ইউক্রেনকে অন্তত ১৪টি লেপার্ড ২ ট্যাঙ্ক সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং অন্যান্য দেশ থেকে বিশেষ করে পোল্যান্ড থেকে জার্মান তৈরি অস্ত্রের অনুরূপ সরবরাহ অনুমোদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মঙ্গলবার জার্মান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জার্মানির তৈরি লেপার্ড ট্যাঙ্কগুলি ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তরের জন্য জার্মানির অনুমতির অনুরোধ করেছে। এর আগে, পোলিশ প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি বলেছিলেন যে, জার্মানি রাজি না হলেও ওয়ারশ ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক সরবরাহ করতে প্রস্তুত দেশগুলির একটি বিকল্প জোট গঠন করবে। তার মতে, পোল্যান্ড ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে একটি ট্যাঙ্ক কোম্পানি (১৪টি) সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং জার্মানির অবস্থান নির্বিশেষে তার নিজস্ব বিবেচনার ভিত্তিতে কাজ করবে।

যুক্তরাষ্ট্রও জানে যে ইউক্রেন পরাজিত হবে : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পারছে যে, কিয়েভ সরকার পরাজিত হতে চলেছে, এবং ইউক্রেনে ট্যাঙ্ক সরবরাহের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র ‘দুর্ভোগ দীর্ঘায়িত করা,’ বলেছেন কর্নেল (অবঃ) ডগলাস ম্যাকগ্রেগর, যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে প্রতিরক্ষা সচিবের উপদেষ্টা ছিলেন। মঙ্গলবার ‘জাজিং ফ্রিডম পডকাস্ট’ অনুষ্ঠানে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি তারা বুঝতে পারছে যে, এটি একটি হেরে যাওয়া মিশন। ইউক্রেন খুব নিশ্চিতভাবে হারতে চলেছে, এবং তারা (মার্কিন প্রশাসন) কীভাবে এ দুর্ভোগকে দীর্ঘায়িত করবে তা বোঝার চেষ্টা করছে।’ যোগ করেছেন যে, ওয়াশিংটনের মেজাজ ‘স্পষ্টভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।’

ম্যাকগ্রেগরের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জার্মানি সহ ইউরোপকে এমন কাজ করার জন্য চাপ দিচ্ছে যা বিশ্বের যে কোনও জায়গায় আইনগতভাবে ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের কাজ’ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। ‘আমি মনে করি জার্মানরা এখন থেমে যেতে আগ্রহী,’ তিনি যোগ করেছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল মঙ্গলবার মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে, মার্কিন প্রশাসন ইউক্রেনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এম১ আব্রামস ট্যাঙ্ক পাঠাতে আগ্রহী, যোগ করেছে যে, এ চালানের ঘোষণা এ সপ্তাহের মধ্যেই করা হতে পারে। এ পদক্ষেপটি জার্মানির সাথে চুক্তির একটি অংশ হয়ে উঠবে, যার মধ্যে রয়েছে বার্লিনের দ্বারা কিয়েভে স্বল্প সংখ্যক লেপার্ড ২ ট্যাঙ্কের চালান, সেইসাথে পোল্যান্ড এবং অন্য দেশগুলোকে এ ট্যাঙ্কগুলোর চালানে জার্মানির অনুমোদন।

পরের দিন, পলিটিকো সংবাদপত্র মার্কিন প্রশাসনের সূত্রের বরাত দিয়ে রিপোর্ট করেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা হিসাবে ইউক্রেনে কমপক্ষে ৩০টি এম১ আব্রামস ট্যাঙ্ক পাঠাতে পারে। দুটি সূত্র কাগজকে জানিয়েছে যে, এ সপ্তাহের শেষের দিকে এ বিষয়ে একটি ঘোষণা করা হতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সরঞ্জামগুলি বিদ্যমান মার্কিন মজুদ থেকে নেয়ার পরিবর্তে ঠিকাদারদের কাছ থেকে কেনা হবে।

কিয়েভে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয়ার কথা ভাবছে ইউরোপ : ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা বুধবার ভোরে বলেছেন যে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ‘ইউরোপীয় সহকর্মীরা’ ইউক্রেনে মার্কিন তৈরি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহের বিষয়ে কাজ করছে।

ফেসবুকে তার অ্যাকাউন্টে (রাশিয়ায় মেটা কর্পোরেশনের অন্তর্গত হিসাবে নিষিদ্ধ, যা রাশিয়ায় চরমপন্থী হিসাবে স্বীকৃত) ইউক্রেনের শীর্ষ ক‚টনীতিক দাবি করেছেন যে, তিনি নাম প্রকামে অনিচ্ছুক একজন ‘ইউরোপীয় সহকর্মীর সাথে কথোপকথনে’ এ বিষয়ে জানতে পেরেছেন। তার দাবি অনুসারে, কর্মকর্তা কুলেবাকে বলেছেন যে, তিনি ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করার জন্য কাজ শুরু করেছেন। ‘তিনি জানেন কি করতে হবে,’ কুলেবা তার কথোপকথন সম্পর্কে লিখেছেন।

২০ জানুয়ারী, জার্মানির রামস্টেইন বিমান ঘাঁটিতে প্রায় ৫০টি দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল যেখানে কিয়েভকে আরও সাহায্যের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি, ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে বৈঠকে ভাষণ দিয়ে পশ্চিমা শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের কিয়েভে ট্যাঙ্ক, আর্টিলারি এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্রæত সরবরাহ করতে বলেছিলেন। উপরন্তু, তিনি ভবিষ্যতের বৈঠকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাওয়ার আশা করেছিলেন। ডেলিভারির বিষয়টি এর আগে নেদারল্যান্ডের পার্লামেন্টে বিতর্কের সময় উত্থাপিত হয়েছিল। পরে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট বলেছিলেন যে, এ মূহুর্তে এ বিষয়টি প্রশ্নের বাইরে, তবে যোগ করেছেন যে, কিছুই উড়িয়ে দেয়া যায় না।

সোলেডারে দুই ব্রিটিশের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করল পররাষ্ট্র দপ্তর : যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর নিশ্চিত করেছে যে, দুই ব্রিটিশ নাগরিক ক্রিস প্যারি এবং অ্যান্ড্রু বাগশো সোলেডারের কাছে রুশ সেনার সাথে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে। গতকাল পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত প্যারির পরিবারের একটি বিবৃতি অনুসারে, ‘পূর্ব ইউক্রেনের সোলেডার থেকে বেসামরিকদের সরিয়ে নেয়ার সময়’ তাদের মৃত্যু হয়েছে।

ওয়াগনার প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানির মালিক ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের মালিকানাধীন কোম্পানি কনকর্ডের প্রেস সার্ভিস ১১ জানুয়ারী রিপোর্ট করেছে যে, একজন ব্রিটিশ নাগরিক, যিনি এর আগে সোলেডারে নিখোঁজ হয়েছিলেন, তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এর আগে, ইউক্রেনের ন্যাশনাল পুলিশ জানিয়েছে যে, দুই ব্রিটিশ ভাড়াটে ক্রিস্টোফার পেরি (২৮) এবং অ্যান্ড্রু বাগশোকে (৪৮) গত ৬ জানুয়ারি শেষবার দেখা গিয়েছিল।
রাশিয়ার প্রেসিডে›ন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ১২ জানুয়ারী সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে, রাশিয়া এ বিষয়ে সহায়তার জন্য যুক্তরাজ্যের অনুরোধ বিবেচনা করবে, তবে এখনও পর্যন্ত এমন কোনও অনুরোধ জমা দেয়া হয়নি। ‘যে কোনো ক্ষেত্রে, যদি আমরা সহায়তা প্রদানের জন্য এমন একটি অনুরোধ পাই তবে আমরা অবশ্যই তা বিবেচনা করব,’ তিনি বলেছিলেন। ‘আমরা মিডিয়া রিপোর্ট থেকে যা জানতে পেরেছি তা হল যে, বর্তমান সমস্যাটি যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের সম্পর্কে, যারা জঙ্গি হিসাবে কাজ করেছিল, যুদ্ধের কর্মে অংশগ্রহণকারী অস্ত্র ব্যবহার করেছিল এবং তাদের নথিগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে আবিষ্কৃত হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে,’ তিনি যোগ করেছেন।

সোলেডারের মুক্তি রাশিয়াকে যে সুবিধা দেবে : সোলেডার শহরের মুক্তির ফলে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী যে এলাকাগুলো হামলা চালানোর জন্য ব্যবহার করে আসছিল, সেসব এলাকা রুশ সেনার জন্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব করে তোলে, ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) এর ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডেনিস পুশিলিন গতকাল বলেছেন। ‘এটা সন্দেহাতীত যে সোলেডারের মুক্তি (আর্টিওমভস্ক বা বাখমুতের দিকে অগ্রগতিতে) একটি মুখ্য ভ‚মিকা পালন করেছিল। এটি এখন শত্রæর সরবরাহ রুটগুলোকে অবরুদ্ধ করা সম্ভব করেছে। এবং অবশ্যই, এটি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখার সুযোগ দিয়েছে, যেখান থেকে শত্রæরা খুব গুরুতর হামলা চালিয়েছে,’ তিনি একটি প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন।

সোমবার, পুশিলিন জানিয়েছিলেন যে, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা সোলেডারকে প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে, শহরে প্রায় কোনও ভবনই অক্ষত নেই। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ইউক্রেনীয় বাহিনী পশ্চাদপসরণ করার সময় লবণের খনি এবং তাদের অবকাঠামোর সর্বাধিক ক্ষতি করার চেষ্টা করেছিল। ডোনেৎস্কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত সোলেডার শহর সাম্প্রতিক কালে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর আর্টিওমভস্ক-সোলেডার-সেভারস্কের প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ ছিল। ১২ জানুয়ারী, সোলেদাডারকে ইউক্রেনীয় বাহিনী থেকে মুক্ত করা হয়েছিল, রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, শহরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আর্টিওমভস্কে (ইউক্রেনীয় নাম বাখমুত) ইউক্রেনীয় সৈন্যদের সরবরাহ রুটগুলোকে বিচ্ছিন্ন করার সুযোগ দেবে, এর পরে যে কোনও অবশিষ্ট ইউনিটগুলোকে অবরুদ্ধ এবং ঘেরাও করা যেতে পারে। সূত্র : তাস, রয়টার্স, বিবিসি নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন-রাশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ