পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ যে কোনো জিনিসের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশেও কমিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার আসন্ন বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সরকার। মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। মানুষের ভোগান্তি হোক, কষ্ট হোক- তা আমরা কখনোই চাই না। বৈশ্বিক কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল। তা এখন অনেকটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। মূল্যস্ফীতিও হ্রাস পাচ্ছে। দেশবাসীর উদ্দেশে
তিনি বলেন, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ যে কোনো জিনিসের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা সমন্বয় করবো। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের মাটি উর্বর। মাটিতে বীজ ফেললেই যেখানে গাছ জন্মে, সেখানে বাইরে থেকে কৃষিপণ্য আমদানি করতে হবে কেন? আমি আপনাদের আবারও অনুরোধ করছি, এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখবেন না।
তিনি বলেন, সংকট আসবে, সংকটে ভয় পেলে চলবে না। জনগণের সহায়তায় আমরা করোনাভাইরাস মহামারি সফলভাবে মোকাবিলা করেছি। বর্তমান বৈশ্বিক মন্দাও আমরা মোকাবিলা করবো, ইনশাআল্লাহ্। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোটা বিশ্ব আজ এক অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৯ সালের শেষ দিকে করোনাভাইরাস মহামারির কবলে পড়ে বিশ্ব। ২০২০ এবং ২০২১ এই দুই বছরে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। অনেক দেশের অর্থনীতিতে ধস নামে। আমাদের অর্থনীতিও ক্ষতির মুখে পড়ে। করোনাভাইরাস মহামারির সেই ক্ষতি কাটিয়ে যখন আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল, ঠিক তখনই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধ শুধু অস্ত্রের যুদ্ধ নয়; সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক যুদ্ধ। অর্থনৈতিক যুদ্ধের প্রভাব কোন একক দেশের গন্ডি মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধপরবর্তী অর্থনৈতিক অবরোধ-পাল্টা অবরোধ বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, চিনি, ভুট্টা, ডাল, রাসায়নিক সারসহ প্রায় সকল ভোগ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পরিবহন খরচ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে জাহাজ ভাড়া ছিল ৮০০ ডলার তার ভাড়া এখন ৩ হাজার ৮০০ ডলার; যে গম টন প্রতি ২০০ ডলারে পাওয়া যেতো, তা ৬০০ ডলারে কিনতে হচ্ছে। আবার নিজস্ব চাহিদা মেটানোর জন্য কোনও কোনও দেশ বিনা নোটিশে পণ্য রফতানি বন্ধ করে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে আমরা পৃথিবীর যেখানেই আমাদের চাহিদার পণ্য পাওয়া যাচ্ছে, সেখান থেকেই তা সংগ্রহ করছি এবং যোগান দিচ্ছি।
সরকারপ্রধান বলেন, সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে আমরা করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের প্রাণহানি যেমন কমাতে পেরেছি, তেমনি অর্থনীতিকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল মানুষের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি তাদের জীবিকা সচল রাখা। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে আমরা জরুরিভিত্তিতে বিভিন্ন হাসপাতালে ১৫ হাজার শয্যা বৃদ্ধি করেছিলাম। স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা জন্য পিপিই, রোগীর জন্য অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর, জরুরি ওষুধসহ সকল উপকরণ সরবরাহ করা হয়। টিকা পাওয়ার উপযোগী সবাইকে বিনামূল্যে প্রায় ৩৪ কোটি টিকা দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৪ কোটি ৯০ লাখ মানুষ প্রথম ডোজ, ১২ কোটি ৬৫ লাখ ২৫ হাজার দ্বিতীয় ডোজ এবং ৬ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ বুস্টার ডোজ পেয়েছেন।
তিনি জানান, শিল্পকারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রাখা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয় তার জন্য এখন পর্যন্ত আমরা ২৮টি প্যাকেজের আওতায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতনভাতা নিশ্চিত করা হয়েছে। ৫০ লাখ প্রান্তিক মানুষকে দুই দফায় আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছিলেন যানবাহনের শ্রমিক, দোকান কর্মচারি, নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক, ইমাম, মুয়াজ্জিন, সংস্কৃতি কর্মীসহ সকল শ্রেণি- পেশার মানুষ।
বস্তিবাসী, দরিদ্র ও স্বল্পআয়ের মানুষ যাঁরা অন্যের কাছে হাত পাততে পারেন না, হটলাইনে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ঘরে চাল-ডালসহ খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির সময় প্রায় ৭ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নানাভাবে উপকৃত হয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠান উপকৃত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮১ হাজার ২৬৬টি।
তিনি জানান, আমরা ১ কোটি পরিবারকে টিসিবি’র ফেয়ার প্রাইজ কার্ড দিয়েছি। এই কার্ডের মাধ্যমে পরিবারগুলো ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও সাশ্রয়ীমূল্যে ভোজ্য তেল, ডাল ও চিনি সংগ্রহ করতে পারছেন। ৫০ লাখ পরিবার ১৫ টাকা কেজি দামে মাসে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারছেন। অসহায় মানুষদের ভিজিডি ও ভিজিএফ-এর মাধ্যমে ৩০ কেজি করে চাল প্রতিমাসে বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।