পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : শনিবার দিবাগত মাঝরাতে বগুড়ার শেরপুরের মহিপুর বাজার নামক স্থানে ২টি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ৪ জনসহ মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে অপর ৭ জন। নিহতদের মধ্যে ৫ জন কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সদস্য ছাড়াও পুলিশের পরিচ্ছন্নকর্মী এবং পুলিশ বহনকারউ ট্রাক চালকও রয়েছে। দুপুরের পর বগুড়া পুলিশ লাইন্স মাঠে এক শোকাবহ পরিবেশে পুলিশের মুসলিম সদস্যদের নামাজে জানাজা শেষে তাদের প্রত্যেকের লাশ নিজ নিজ গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো হয়। ঘটনায় পুলিশের আইজিপি একে এম শহীদুল হক শোক জানিয়েছেন।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে বগুড়ার শেরপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অফিসার মো. সোহেল রানা জানান, শনিবার মধ্যরাতে শেরপুর ফায়ার স্টেশন থেকে মাত্র ৫শ’ গজ উত্তরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের মহিপুরে শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১টায় এই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। সাথে সাথেই খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে নিহত এবং আহতদের উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় ।
পুলিশ জানায়, কুড়িগ্রাম পুলিশের একটি দলকে বহনকারী খুলনা মেট্র - ট- ১১-০০৯২ ঢাকার পথে রওয়ানা হয়ে মহিপুরে পৌঁছালে বিপরীতমুখী সার বোঝাই অপর একটি ( ঢাকা মেট্রো ট-১৪-৪৭৪৫) ট্রাকের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ভয়াবহ সংঘর্ষে দুটি ট্রাকেরই সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে মর্মান্তিক হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্র জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত ওই ট্রাকটি রিকুইজেশন করে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের একটি দল তাদের ব্যবহৃত অকেজো শতাধিক পুরাতন ব্যাটারি এবং ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে গত শনিবার সন্ধ্যায় কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল।
নিহত ও আহতদের পরিচয়
নিহতরা হলো-কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের কনস্টেবল শাজাহান কবীর (নীলফামারি), কনস্টেবল (আলমগীর হোসেন (৩২), (লালমনিরহাট), কনস্টেবল শামসুল আলম (৪৪) (সিরাজগঞ্জ), কনস্টেবল সোহেল রানা (৩৫), (গাইবান্ধা), কনস্টেবল প্রণব চন্দ্র রায় (৩৮), (লালমনিরহাট) পরিচ্ছন্নকর্মী কাম ঝাড়–দার শ্যামল দত্ত (৪২) এবং পুলিশ বহনকারী ট্রাকের চালক আব্দুর রহমান (৪৮), (গাইবান্ধা)।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে গুরুতর আহতরা হলোÑ পুলিশের এসআই কুড়িগ্রাম জেলার মনোয়ার হোসেন (৩০) বেতার বিভাগের এএসআই রুবেল ইসলাম (৩২), পুলিশ কনস্টেবল ফজলু মিয়া (৪৫), মিজানুর রহমান (২৫) এবং মশিউর রহমান (৩৫)। এরা বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে গতকাল রবিবার সকালে শেরপুরে ওই সড়ক দুর্ঘটনার স্থল পরিদর্শন করেছেনÑ রাজশাহী পুলিশ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ নিশাদুল আরিফ ও অন্যান্য কর্মকর্তা, বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিনসহ বগুড়া পুলিশ সুপার ও শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সরোয়ার জাহান। আহতদের মধ্যে পুলিশের এস আই মঈনুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শেরপুর থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে । অপর ট্রাকের চালককে আহত অবস্থায় গ্রেফতার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নামাজে জানাজা শেষে নিজ নিজ এলাকায় লাশ প্রেরণ
দুপুরের মধ্যেই নিহত পুলিশ সদস্যদের পোস্ট মর্টেম শেষে তাদের লাশ নিয়ে আসা হয় বগুড়া পুলিশ লাইন্স ময়দানে। বেলা সাড়ে ৩টায় এখানে শোকার্ত পরিবেশে নিহতদের যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক সম্মাননার পর মুসলিম সদস্যদের নামাজে জানাজা করা হয়। জানাজায় রাজশাহী ও রংপুর রেঞ্জের পাশাপাশি বগুড়া ও কুিড়গ্রাম পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নিহতদের ঘনিষ্ঠ স্বজনরা অংশ নেন। নিহতদের স্বজনদের হাতে এসময় বগুড়া ও কুড়িগ্রাম পুলিশের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদানের অর্থ দেয়া হয়।
পরে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় প্রত্যেকের লাশ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয় বলে জানান বগুড়া পুলিশের মিডিয়া উইং-এর দায়িত্বে নিয়োজিত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার গাজীউর রহমান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।