Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কুবির রেজিস্ট্রার দফতরে তালা

শিক্ষকদের নিয়ে অশালীন মন্তব্যের শাস্তির দাবি কুবি শিক্ষক সমতির

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যাল সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২২, ৯:২০ পিএম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষকদের নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীর আপত্তিকর ও অশালীন মন্তব্যকারীদের শাস্তির দাবি ও রেজিস্ট্রার দফতরে তালা ঝুলানোর প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী ও সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার কর্মকর্তা থেকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব প্রদান ও বর্তমান রেজিস্ট্রার পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু তাহেরের অপসারণের দাবিতে দফতরে তালা দিয়ে রেখেছে কর্মকর্তা-কর্মাচারীরা। তবে তালা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে একে অপরের উপর দায় চাপিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শিক্ষক সমিতির দেয়া এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে সিংহভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী সুচারুভাবে কাজ করে আসছিল। কিন্তু গত ১৯ জানুয়ারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর অশালীন মন্তব্য ও শিক্ষকদের বিষয়ে আপত্তিকর, অবমানামূলকও শিষ্টাচার বহির্ভ‚ত আচরণ করে। এ ধরণের আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য যারা রেজিস্ট্রার দফতরে তালা ঝুলিয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় এনে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম চালু রাখার দাবিও জানানো হয়।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রার দফতরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে অফিসার্স এসোসিয়েশন এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির অর্ধশতাধিক কর্মচারীরা। তবে রেজিস্ট্রারের দফতরে তালা দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল লতিফ বলেন, শিক্ষকদের নিয়ে করা মন্তব্যের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। তালা দেওয়ার বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। কে বা কারা তালা দিয়েছে আমি জানিনা।
৩য় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি দ্বিপক চন্দ্র মজুমদার দাবি করেন, অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতত্বে আমরা তালা দিয়েছি। দাবি দাওয়া পূরণ হলে তালা খুলে দিব। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি মো. আবু তাহের। তিনি বলেন, অফিসার্স এসোসিয়েশন তালা দেয়নি। কিছু বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে তালা দিয়েছে।
বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি-সেক্রেটারি জানিয়েছেন তাদের সংগঠন থেকে তালা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যারা সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত তারাই তালাই দিয়েছে। গতকাল রেজিষ্ট্রার মহোদয় অফিস করেছে, আমরাও আমাদের কাজ করেছি। রাতের আধারে কে বা কারা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আমারা এখনো নিশ্চিত নয়। যারা তালা দিয়েছে আগামী রোববারের মধ্যে তারা তালা না খুলে দিলে, প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আমরা তালা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কিছু দাবি দাওয়া নিয়ে রেজিস্ট্রার দফতরে তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন। কিন্তু বস্তুত এসকল নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে আমার একক কোনো সিদ্ধান্তে গৃহীত হয় না। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং সিন্ডিকেট সভা সকল সিদ্ধান্ত এবং নীতিমালা সম্মিলিতভাবে বাস্তবায়ন করে থাকে।
এ বিষয়ে প্রো- ভিসি বলেন, আমি কর্মকর্তা পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছি। তালা কে দিয়েছে তারা তা স্বীকার করছে না। আবার তাদের দাবিগুলোও তারা বলতে পারছে না। এটা তো হতে পারে না। তাদের দাবি ভিসির কাছেও। তাহলে তারা রেজিস্ট্রার দফতরে কেন তালা মেরেছে তা বোধগম্য নয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রারের অপসারণ ও কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে রেজিস্ট্রার পদে দায়িত্ব দেয়ার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স এসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু কর্মচারী পরিষদ। পরে রাত ৮টার দিকে তারা রেজিস্ট্রার দফতরে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ