Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে জরিমানা

আজ মন্ত্রিসভায় উঠছে বাণিজ্য সংগঠন আইন

পঞ্চায়েত হাবিব : | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

আইনের কোনো বিধান বা আদেশ বলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২১ প্রস্তুত করেছে সরকার। অংশীজনদের মতামতসহ আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সাপেক্ষে আইনটি প্রস্তুত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আজ সোমবার আইনের খসড়া মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। আইনটি কার্যকর হলে বাণিজ্য সংগঠনের লাইসেন্সের জন্য ফ্রি দিতে হবে। সরকার বিধিমালার মাধ্যমে ফ্রি নির্ধারণ করবে। আইনে যৌথ চেম্বার ও নারী ব্যবসায়ী সংগঠনকে যুক্ত করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, সরকার নিযুক্ত কমপক্ষে একজন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা মহাপরিচালক হিসেবে বাণিজ্য সংগঠন সম্পর্কিত কাজগুলো সম্পাদন করবেন। আইনের কোনো বিধান বা আদেশ লঙ্ঘন করলে বা আইনের কোনো বিধান বা আদেশ বলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনকে সরকার সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারবে। এ আইনের অধীনে দেওয়া কোনো আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে মামলাও করা যাবে না।
এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ ইনকিলাবকে বলেন, আইনটির ওপর বাণিজ্য সংগঠনগুলোর মতামত নেওয়া হয়েছে। তাদের মতামত সাপেক্ষে কিছু পরিবর্তনও আনা হয়েছে। এরপর ভেটিং’র জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তারা আবার কিছু বিষয় পরিবর্তন করতে পুনরায় সুপারিশ করে। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সাপেক্ষে আইনটি চ‚ড়ান্ত করা হচ্ছে। এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে।

জানা গেছে, দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে চার শতাধিক বাণিজ্য সংগঠন রয়েছে। এসব সংগঠনকে সহায়তা করতে বাণিজ্য সংগঠন আইন-২০১৬ খসড়া প্রস্তুত করা হয়। পরে ২০১৭ সালে ৬ ফেব্রæয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে আইনটি আরো যুগোপযোগী করে আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে পরবর্তী সভায় তোলার নির্দেশ দেয় মন্ত্রিসভা। ওই নির্দেশনার পর বাণিজ্য সংগঠন আইন-২০১৮ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘসময় আইনটি চ‚ড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে গুরুত্ব দিয়ে আইনটির চ‚ড়ান্ত রূপ দিতে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠায়। ভেটিং শেষে এটি আজ সোমবার মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য তোলা হবে বলে জানা গেছে।

কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যমান বাণিজ্য সংগঠনগুলো বর্তমানে ট্রেড অর্গানাইজেশন অর্ডিন্যান্স’র ১৯৬১’ আওতায় চলছে। ১৯৮৪ সালে আইনে কিছু সংশোধনী আনা হয়। কিন্তু ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে জারি হওয়া অধ্যাদেশগুলোকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়। ফলে কার্যকারিতা হারায় ট্রেড অর্গানাইজেশন অর্ডিন্যান্স (সংশোধিত) ১৯৮৪। এটি বাংলায় অনুবাদ করা হয়। এসব অধ্যাদেশের মধ্যে কয়েকটির আবশ্যিকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনার মাধ্যমে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর মতামত নিয়ে বাণিজ্য সংগঠন অধ্যাদেশের প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে নতুন আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বর্তমানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগরে পরিচালকের তত্ত্বাবধানে দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এই অনুবিভাগ থেকে বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে লাইসেন্স দেওয়া, লাইসেন্সপ্রাপ্ত সংগঠনগুলোর সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি অনুযায়ী পরিচালনা নিশ্চিত করা, সংগঠনের ব্যবস্থাপনা যথাযথ না হলে নির্বাহী কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগের মতো কার্যত্রক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া যুক্তিসঙ্গত কারণে কোনো সংগঠন নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হলে কমিটির মেয়াদ বাড়ানোসহ সংগঠনগুলোর অডিট রিপোর্ট, বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী মন্ত্রণালয়ে পাঠানোসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় থেকে সংগঠনগুলোর নির্বাচন পদ্ধতিসহ সব ধরনের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ