Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

এক মাস যাবৎ বন্ধ লঞ্চ-ফেরি চলাচল

রাজবাড়ীর জৌকুড়া-পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌরুট

রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

পদ্মায় তীব্র নাব্য সঙ্কট ও অসংখ্য ডুবোচরের কারণে অন্তত এক মাস যাবৎ বন্ধ রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সাথে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম রাজবাড়ীর জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌরুটের ফেরি ও লঞ্চ চলাচল। রাজবাড়ীর জৌকুড়া ঘাট থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি অস্থায়ী ট্রলার ঘাট তৈরি করে পারাপার করা হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় ঘাটে যেতে হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি অথবা পায়ে হেটে।
জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাজবাড়ীর তত্ত্বাবধানে থাকা এই ঘাট দিয়ে স্বাভাবিক সময়ে ৩টি ফেরি, ২টি লঞ্চ ও ৪টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার চলাচল করে। ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বর্তমানে ৪টি ট্রলারে চলছে পারাপার। ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ীর সাথে পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহী জেলার লাখো মানুষের যোগাযোগের একমাত্র সহজ পথ রাজবাড়ীর জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌরুট। পদ্মায় দ্রুত পানি কমে যাওয়ার ফলে আটকে গেছে ফেরি ও ফেরির পন্টুন। দেখা দিয়েছে তীব্র নাব্য সঙ্কট। ঝুঁকি এড়াতে বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল।

গতকাল বুধবার সকালে সরেজমিনে রাজবাড়ীর জৌকুড়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ধাওয়াপাড়া বাজার থেকে জৌকুড়া ঘাটের কিছু অংশ ইটের রাস্তা তৈরি ও বাকি অংশের সংযোগ সড়কের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। একটি ভেকু (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে মাটি সরানো হচ্ছে। ফলে ঘোড়ার গাড়িতে ও পায়ে হেটে ঘাটে পৌছাচ্ছে মানুষ।

এ সময় পাবনা জেলার বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর শীত মৌসুম বা শুষ্ক মৌসুম আসলেই এই ঘাটটি বন্ধ থাকে। পদ্মার বুকে চর জেগে উঠার কারণে অন্তত এক মাইল দূরে কেবল যাত্রী পারাপারে ট্রলার সার্ভিস চালু রেখেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেখানে যেতে নেই সংযোগ সড়ক, তাই ঘোড়ার গাড়িতে বাড়তি ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে ঘাটে এসেছি। এখন ট্রলারে করে নদী পাড়ি দিবো।

পারভীন আক্তার নামে অপর যাত্রী বলেন, নাগরিক হিসেবে যেটুকু সুবিধা পাওয়ার কথা আমরা তা পাচ্ছি না। মহিলারা ব্যাগ ও সন্তান নিয়ে পায়ে হেটে ঘাটে পৌছাচ্ছে। এর উপর সন্ধ্যার পর আর ট্রলার পাওয়া যায় না। নদীতে চর জেগে যাওয়ার কারণে ঝুঁকি তো আছেই। যে কোন সময় ট্রলারে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এখনই খনন করে নদীকে স্বাভাবিকভাবে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।

ঘাট কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক সোহেল রানা জানান, এই ঘাটটি উত্তরাঞ্চলের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের সহজ মাধ্যম। ঘাটটি বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে লাখো মানুষ। ঘাটটি চালু হলে যাত্রীদের যেমন সুবিধা হবে তেমনি কমবে পরিবহন ব্যয়। এখন যারা ট্রাকে করে রাজবাড়ী থেকে পাবনায় পণ্য নেওয়া আনা করবে তাদের কুষ্টিয়ার সেতু হয়ে যেতে হবে। এতে দ্বিগুণ খরচ হচ্ছে ট্রাক চালকদের।

ঘাট কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার শরীফ খান জানান, একটি ফেরিকে চলাচল করতে কমপক্ষে ১০ ফুট গভীরতা প্রয়োজন যা এই পদ্মায় নেই। গত বছর যেমন দেড় কিলোমিটার এলাকায় চর পড়েছিলো। বর্তমানে পদ্মায় নাব্য সঙ্কটের কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই সাথে চলমান আছে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ। জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজবাড়ীর জৌকুড়া-পাবনার নাজিরগঞ্জ নৌরুট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ