পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার ও জালিয়াতি রোধে সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রযুক্তিবিদকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহŸান জানিয়ে বলেছেন, তথ্য প্রযুক্তি একদিকে যেমন আমাদের জন্য অবারিত সুযোগের দ্বার উন্মোচিত করেছে, তেমনি এর অপব্যবহার ও জালিয়াতির কারণে অনেক চ্যালেঞ্জেরও জন্ম দিয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির বিনিময় ও হস্তান্তর বৈশ্বিক উন্নয়নের এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি উদ্ভাবন বা আমদানিই যথেষ্ট নয় বরং এর টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ। গতকাল বঙ্গভবনের গ্যালারী হল থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ আয়োজিত চারদিনব্যাপী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিশ্ব সম্মেলন ‘ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন আইটি-২০২১’ এবং ‘অ্যাসোসিও ডিজিটাল সামিট-২০২১’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে এই আহŸান জানান।
প্রেসিডেন্ট চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তা, পেশাজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকেও এগিয়ে আসার আহŸান জানান। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অগ্রগামী প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে।
তিনি জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। ২০০৯ সালে দেশের মাত্র ৮ লাখ মানুষ ইন্টারনেট সেবা পেত। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১২ কোটির বেশি। এ সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে চার গুণের বেশি।
আব্দুল হামিদ বলেন, এ বছরেই পূরণ হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার।
ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব, মন্তব্য করে প্রেসিডেন্ট বলেন,‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তার প্রমাণ মহামারীর দুঃসময়ে তথ্য-প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীলতা। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের শিক্ষা কার্যক্রম, বিচারিক কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং সেবা ইত্যাদি হয়ে পড়ে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর।
প্রেসিডেন্ট বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে দেশে গড়ে উঠছে ডিজিটাল অর্থনীতি। আমেরিকা, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টিরও বেশি দেশে বাংলাদেশের তৈরি সফটওয়্যার ও আইটি সেবা সরবরাহ করা হচ্ছে। আইটি খাতে রপ্তানি ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, যে ২০২৫ সালের মধ্যে এ আয় ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে এবং জিডিপিতে সফটওয়্যার ও আইসিটি সেবাখাতের অবদান ৫ শতাংশে উন্নীত হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশজুড়ে গড়ে তুলেছে ৩৯টি হাইটেক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার।
ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যার দিক থেকে সারাবিশ্বে আমাদের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশে সাড়ে ৬ লক্ষ সক্রিয় ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। ফ্রিল্যান্সারদের পেশাগত উন্নয়নে আইডি কার্ড প্রদান করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ডাক্তার মো. আব্দুল মান্নান, উইটসার চেয়ারম্যান ইয়ানিস সিরোস এবং বিসিএস সভাপতি মোহাম্মদ শহীদ-উল-মুনীর অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
এনডিসি গ্রাজুয়েটদের অর্জিত জ্ঞান নিজ নিজ দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর আহŸান প্রেসিডেন্টের: প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি) ও আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সে (এএফডাবিøউসি) অংশগ্রহণকারীদের অর্জিত জ্ঞান তাদের নিজ নিজ দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করায় কাজে লাগানোর আহŸান জানিয়েছেন।
গতকাল বঙ্গভবনের দরবার হলে এনডিসি ও এএফডাবিøউ কোর্স-২০২১ এর গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশে প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করে বলেন, এনডিসির কোর্স আপনাদেরকে দেশ সেবায় অনেক দূর এগিয়ে দেবে এবং অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
সফলভাবে কোর্স সম্পন্ন করায় কোর্স সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, আমার বিশ্বাস যে, জাতীয় নিরাপত্তা থেকে জাতীয় উন্নয়ন, নীতি প্রনয়নে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে এটি একটি অনন্য সাধারণ কোর্স যা আপনাদের পেশাগত জ্ঞান সমৃদ্ধ করবে এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আপনাকে আরো আস্থাবান করে তুলবে।
প্রেসিডেন্ট বলেন, ২০২১ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী বছর, কারণ এবছর দেশ দুটি মেগা ইভেন্ট-স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং দেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছে।
আবদুল হামিদ সশস্ত্র বাহিনীর মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এনডিসি-তে গুরুত্বপূর্ণ কোর্সে যোগদান ও সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য ১৩টি দেশের ২৭ জন বিদেশী অংশগ্রহণকারীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে এবং এনডিসি বেসামরিক অঙ্গনেও সমানভাবে গৃহীত ও প্রশংসিত হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিয়ে বেসামরিক প্রশাসনের বেশ কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অসাধারণ অবদান রাখছেন। তিনি বলেন, কোর্সের মাধ্যমে গ্র্যাজুয়েটেরা জাতীয় নিরাপত্তা, জাতীয় উন্নয়ন, নেতৃত্ব এবং নীতিনির্ধারণের বিভিন্ন দিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রশাসনের বিভিন্ন সমস্যা এবং এর সমাধানের বিষয়েও অধ্যয়ন করছে। হামিদ বলেন, আমি এটা জেনেও খুব আনন্দিত যে ওয়ার কোর্স গ্র্যাজুয়েটগণ বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অপারেশনাল স্তওে নেতৃত্ব এবং যুদ্ধের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।