Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রশ্ন ঃ কোরআন হাদীসের আলোকে জান্নাত লাভের উপায় কি?

| প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

উত্তর : জান্নাত মুমিনের চুড়ান্ত সফলতা। মহান আল্লাহ তায়লা বলেন,যাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সেই সফলকাম । (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫) প্রতিটি মুমিনের শেষ ঠিকানা জান্নাত । জান্নাত অনন্ত সুখের শান্তি সুনিবিড় আধার। জান্নাত যাওয়ার পথ প্রক্রিয়া মহান আল্লাহ অত্যন্ত সহজ করে দিয়েছেন । নিম্নে কোরআন ও হাদীসের আলোকে জান্নাত লাভের কয়েকটি উপায় বর্ণনা করা হলো।

১-২. ঈমান ও নেক আমল ঃ মহাগ্রন্থ আল কোরআনে বেহশত লাভের জন্য সর্বপ্রথম ঈমানের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে । এর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নেক আমল । আর কোরআনের সর্বত্র ঈমানের সাথে নেক আমলের কথা উল্লেখ রয়েছে । যেমন ঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে , তারা বেহশতের অধিবাসী । (সুরা বাকারা : ৮২)

৩.ত্বাকওয়া ঃ ত্বাকওয়া হলো, আল্লাহকে ভয় করে কোরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক আমল করা । অল্পে তুষ্টি এবং পরকালে আত্মার পাথেয় অর্জন করা । ত্বাকওয়া বেহশত লাভের উপায় হওয়া সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, পরকালে মুত্তাকীগণ বেহশত ও প্রশ্রবণ সমূহের মধ্যে বসবাস করবে । ( আল হিজর : ৪৫) অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা দ্রতগতিতে তোমাদের প্রভুর মাগফিরাত ও এমন বেহশতের দিকে অগ্রসর হও ,বেহশত আসমান ও যমীন বরাবর প্রশস্থ, যা মুত্তাকী বা আল্লাহ ভীরু লোকদের জন্য নির্মিত হয়েছে । (সুরা আলে ইমরান : ১৩৩) ত্বাকওয়া সম্পর্কে রাসুল সঃ বলেন, মানুষকে অধিকন্ত যে জিনিস বেহেশতে প্রবেশ করাবে তা হলো , আল্লাহর ভয় ও সচ্চরিত্র । ( তিরমিযী, ইবনু মাযাহ , ও মুছনাদে আহমদ )

৪. আল্লাহ ও তার রাসূল সঃ এর অনুকরণ ও অনুসরণ ঃ এই সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা আল্লাহ ও রাসুল সঃ অনুসরণ ও অনুকরণ করে, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে এমন বেহশত সমূহে প্রবেশ করাবেন, যার নিম্মদেশ থেকে ঝরনা বা নহর সমূহ প্রবাহিত হয়েছে । পক্ষান্তরে যারা মুখ ফিরিয়ে নিবে আল্লাহ তাদেরকে কঠিন শাস্তি দিবেন ।( সুরা আল ফাতাহ: ১৭)

৫. জিহাদ ঃ এই সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত । তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাাস্তায়, অতঃপর মারে ও মরে। তাওরাত , ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। ( সুরা আত তওবা : ১১১) রাসূল সঃ বলেন, ঋণ ছাড়া শহিদদের সকল গুনাহ ক্ষমা করা হবে । ( শরহে মুসলিম নবভী : ১৩/৩৩)

৬. তওবা ঃ বেহশত লাভের অন্যতম উপায় হলো , তওবা করা । তওবা করলে পূর্বেকার সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। এই সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, কিন্তু তারা ব্যতীত যারা তওবা করেছে , বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং নেক কর্ম সম্পাদন করেছে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের উপর কোন জুলুম বা অত্যাচার হবে না । ( সুরা মারইয়াম: ৬০) রাসূল সঃ বলেন , গুনাহ হতে তওবাকারী ব্যক্তি ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে সম্পূর্ণ নিষ্পাপ । (ইবনে মাযাহ হাঃ নং ৩০০৮)

৭. ইস্তেকামাত ঃ ইস্তেকামাত হলো আল্লাহর দ্বীনের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত থাকা। এই সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চই যারা বলে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ অতঃপর এ কথার উপর অবিচল থাকে, তাদের কোন ভয় নাই , এবং তারা চিন্তিতও হবে না । তারাই জান্নাতের অধিকারী। তারা তথায় চিরকাল থাকবে । তারা যে কর্ম করত এটা তাদের কর্মের প্রতিফল । (সুরা আল আহক্বাফ : ১৪)

৮. ইলম শিক্ষা করা ঃ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইলম হাসিল করা। রাসূল সঃ বলেন, যে ব্যক্তি ইলম হাসিলের জন্য কোন রাস্তায় চলে , আল্লাহ তার জন্য বেহশতের রাস্তা সহজ করে দেন । (শরহু মুসলিম নবভী: ১৭/২৪)

৯. মসজিদ নির্মাণ ঃ রাসুল সঃ বলেন , যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে আল্লাহ অনুরুপ ভাবে তার জন্য বেহশত একটি ঘর নির্মাণ করবেন । ( ফতহুল বারী : ১/৫৪৪)

১০. হালাল খাওয়া ঃ হালাল খাদ্য গ্রহণকারীরাই নাজাত পাবে তাদের ঠিকানা হবে জান্নাত । রাসুল সঃ বলেছেন যে ব্যক্তি হালাল খেয়েছে সুন্নাহ মোতাবেক আমল করেছে এবং মানুষকে কষ্ট দান থেকে বিরত রয়েছে সেই জান্নাতে যাবে। (তিরমিযী)

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তাওফিক দান করুক । আমিন

উত্তর দিচ্ছেন : কে এম ছালেহ আহমদ বিন জাহেরী। শিক্ষার্থী ঃ মৌকারা দারুচ্ছুন্নাত নেছারীয়া কামিল মাদ্রাসা নাঙ্গলকোট , কুমিল্লা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জান্নাত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ