Inqilab Logo

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দৌলতপুরে হুমকির মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও ৩ ওয়ার্ডের মানুষ

ভাঙ্গন ঠেকাতে ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০২১, ১:৫৭ পিএম

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের কয়েক কি. মি. এলাকাজুড়ে পদ্মার ভাঙ্গনে কয়েক হাজার একর আবাদী জমি ও বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও এলাকার সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসীর দাবি ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের। তবে দৌলতপুরের সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্র প্রচেষ্টায় পদ্মার ভাঙ্গন ঠেকাতে নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে তা নিয়ন্ত্রন করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডের অসংখ্য মানুষের পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে কয়েক হাজার একর আবাদী জমি ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ, ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুটি, সরকারী স্থাপনা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছেন ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পদ্মাগর্ভে চলে যাওয়ায় তারা এখন সর্বশান্ত ও আশ্রয়হীন। ভাঙ্গন ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি তাদের।

মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলপাড়া এলাকার কৃষক ফজলুল হক জানান, প্রতিবছরই পদ্মা নদীতে পানি আসলে জমি জায়গা ভেঙ্গে নদীতে তলিয়ে যায়। এবারও এলাকার অসংখ্য মানুষের আবাদী জমি পদ্মার ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এলাকাবাসীর জমি জায়গা ও ঘর-বাড়ি বাঁচাতে পদ্মার ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

উজ্বল হোসেন নামে এক স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী জানান, মরিচা ইউনিয়নের ভুরকা হাটখোলা পাড়া ও কোলদিয়াড় এলাকায় পদ্মার ভাঙ্গন ঠোকাতে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্ তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। সংসদ সদস্যের চেষ্টায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মরিচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলমগীর জানান, নদী ভাঙ্গনের কবলে তার ইউনিয়ন ব্যাপক হুমকির মুখে আছে। ইতিপূর্বে তার ইউনিয়নের নদীভরাট, চিতলমারী, রুইমারী, চৌদ্দহাজার ও নতুন চরসহ অনেকগুলো গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে হাটখোলাপাড়া, ভুরকাপড়া ও কোলদিয়াড় এলাকা প্রবল নদী ভাঙ্গনে জমি জায়গা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রাইমারী ও হাইস্কুল এবং ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুঁটি হুমকির মুখে রয়েছে। কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্ ভাইয়ের ঐকান্তিক পদ্মার ভাঙ্গন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে এরজন্য তিনি সাধুবাদ জানান। তিনি পদ্মার ভাঙ্গনরোধে অতিশীঘ্রই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে এই ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ড নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার ব্যবস্থা করার দাবি করেন। যাতেকরে তাদের আবাদী জমি বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রাস্ত-ঘাট ও জুনিয়াদহ বাজার এবং অসংখ্য সরকারী বেসরকারী স্থাপনা রক্ষা পায়। এজন্য তিনি সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্র হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

দৌলতপুরের মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলপাড়ার পদ্মার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৗশলী মো. আফছার উদ্দিন জানান, পদ্মার ভাঙ্গনরোধে ১০৬ মিটার এলাকায় ১৩ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এটা আরো সম্প্রসারিত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তবে আশ্বাস নয়, সর্বগ্রাসী পদ্মার করাল গ্রাস থেকে দুই উপজেলার মানুষকে বাঁচাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, এমনটাই দাবি ভুক্তভোগীসহ পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী ভাঙ্গন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ