পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর শনিরআখড়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়কের উপর ময়লার স্তূপ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চারটি ওয়ার্ডের ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে মহাসড়কের উপরেই। জমে থাকা ময়লার স্তূপ অনেকখানি এলাকাজুড়ে মহাসড়কের দুই লেন দখল করে নিয়েছে। এতে করে ওই স্থানে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজটে আটকে থাকা গাড়িগুলোর যাত্রীরা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ। ময়লা ভাগাড়ের কাছেই বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, জামে মসজিদ, একাধিক মাদরাসা ও দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অবস্থান। মহাসড়কের ওপর হঠাৎ করে এভাবে ময়লা ফেলায় পুরো এলাকায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। অন্যদিকে, রাজধানীর ডেমরা এলাকাতেও আবাসিক এলাকায় তৈরি করা হয়েছে ময়লার ডাম্পিং স্টেশন। ডাম্পিং স্টেশনের প্রতিবাদে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অধিবাসীরা সেখানে মানববন্ধন করেছে।
অর্থনীতির লাইফ লাইন বলা হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। মহাসড়কটির সৌন্দর্যবর্ধনেও নেয়া হয়েছে প্রকল্প। সেই মহাসড়কে রাজধানীর প্রবেশ পথে বানানো হয়েছে ময়লার ডাম্পিং স্টেশন। স্থানীয়রা জানান, শনিরআখড়া বাস স্ট্যান্ডের কাছে দনিয়া বিশ্¦বিদ্যালয় কলেজের কয়েকগজ পশ্চিমে মহাসড়কের লেনের উপরই ফেলা হচ্ছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চারটি ওয়ার্ডের ময়লা। দিন শেষে ময়লার স্তূপ মহাসড়কের দুটি লেন দখল করে নিচ্ছে। তার উপর সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি নিয়মিত না আসায় স্তূপের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ক্রমেই বাড়ে। এমতবস্থায় ওই স্থানে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। ময়লা দুর্গন্ধ যানজটে আটকে পড়া যাত্রীদের দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একটার পর একটা ময়লাভর্তি গাড়ি এনে মহাসড়কের উপরেই ফেলা হচ্ছে। একজন ময়লার গাড়ি চালক জানান, এই এলাকার ময়লার টেন্ডার নিয়েছেন দনিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়। তার নির্দেশেই ময়লাগুলো মহাসড়কের উপর ফেলা হচ্ছে। স্থানীয় একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানান, ময়লার টেন্ডার হওয়ার পর তাদের সাথে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা করা হয়নি। যিনি টেন্ডার পেয়েছেন তার দায়-দায়িত্বেই সবকিছু হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের ময়লা অপসারণের জন্য যেসব শর্ত দেয়া আছে, তার কোনোকিছুই মানা হচ্ছে না। বাসা বাড়ি থেকে টাকা নেয়া হচ্ছে দ্বিগুণ। আমীর হোসেন নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলে কাউকে কেয়ার করে না। এলাকাতেও যেখানে সেখানে ময়লা স্ত‚প করে রাখা হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করার সাহস কারো নেই। এ কারণেই এখন মহাসড়কের উপর ময়লা ফেলার সাহস করেছে।
মহাসড়কের যে স্থানে ময়লার স্ত‚প তার কয়েক গজ দুরেই মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার। মহাসড়ক ধরে গাড়িগুলো রাজধানীতে প্রবেশদ্বারে ফ্লাইওভারের কাছে এসে যানজটে আটকে যাচ্ছে। যানজটে আটকে থাকা এক বাসের চালক বলেন, এটা খুবই ন্যাক্কারজনক একটা কাজ। রাজধানীর প্রবেশ পথে এরকম দুর্গন্ধ ভাবাই যায় না। ওই বাসের একজন যাত্রী বলেন, আমরা কি দিন দিন অসভ্য হয়ে যাচ্ছি। রাজধানীর প্রবেশপথে সৌন্দর্য থাকবে নাকি ময়লা থাকবে? ময়লার স্ত‚পের কাছেই বড় একটা জামে মসজিদ। ওই মসজিদের মুসল্লিরা বলেন, কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। ময়লাগুলো পরিস্কার করা হয় না। বৃষ্টিতে এগুলো পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মসজিদের ভিতরেও দুর্গন্ধে টেকা মুশকিল। এ ছাড়া মহাসড়কের সার্ভিস লেনের সাথে বাসাবাড়ি। সেখানকার বাসিন্দারাও ময়লার কারণে অতিষ্ঠ। সবুর নামে এক বাসিন্দা বলেন, দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে এভাবে ময়লা ফেলার সাহস করে কিভাবে? দেশে কি আইন শাসন নেই?
মহাসড়কের পাশেই দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। সেই কলেজের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দনিয়া কলেজ খোলা থাকলে শিক্ষার্থীরাই এর প্রতিবাদ করতো। এখন প্রতিবাদ করার কাউকে তো দেখছি না। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের উচিত এক্ষুণি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য কর্মকতা এয়ার কমডোর বদরুল আমিন গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, এই এলাকার জন্য নির্দিষ্ট গাড়ি নষ্ট ছিল। সে কারণে বর্জ্য নেয়া হয় নি। গাড়ি ঠিক করা হয়েছে এবং বিষয়টি জানতে পেরে আমি নির্দেশনা দিয়েছি দ্রæত বর্জ্য সরানোর জন্য। তিনি আরো বলেন, অন্তর্বতীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের (এসটিএস) কাজ চলছে। দ্রæতই কাজ শেষ হবে আশা করি। তখন রাস্তায় বর্জ্য ফেলা হবে না।
অন্যদিকে, ডেমরার পূর্ব হাজীনগরের জনবহুল এলাকায় ময়লার ডাম্পিং স্টেশনের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার রাজধানীর মানববন্ধন করেছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। গত মঙ্গলবার বিকালে ডিএসসিসি’র ৬৮ নং ওয়ার্ডের পূর্ব হাজীনগর এলাকায় ময়লার ডাম্পিং স্টেশনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানান, ময়লার ডাম্পিং স্টেশনের পশ্চিম দিকে জনবহুল আবাসিক এলাকা, দক্ষিণ দিকে মাদরাসা, মসজিদ ও আবাসিক এলাকা, পূর্ব দিকে ঢাকা ওয়াসার পানির খাল এবং উত্তর দিকে নির্মিতব্য ১৩ তলা বিশিষ্ট পুলিশ হাউজিং প্রকল্প। উক্ত এলাকায় ময়লার ডাম্পিং হলে দূর্গন্ধে মানুষ বসবাস করতে পারবে না এবং ভয়ঙ্কর পরিবেশ বির্পযয় ঘটবে। এছাড়া ময়লার এ ডাম্পিং এলাকায় প্রশস্ত ও বিকল্প রাস্তা না থাকায় এখানে সব সময় যানযট লেগে থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ময়লা ডাম্পিংয়ের জন্য জনমানবহীন জায়গা থাকলেও সেদিকে নজর নেই সিটি করপোরেশনের। অবিলম্বে এ ময়লার ডাম্পিং অপসারণ না করা হলে কঠোর আন্দেলনের ঘোষণা দেন মানববন্ধনে অংশগ্রহকারীরা। এ সময় বক্তব্য রাখেন স্থানীয় হাজী মোয়াজ্জেম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. কামরুল আলম বেলাল, দারুল কোরআন মাদরাসার সভাপতি হাজী নুরুল হুদা, ইসলামিয়া র্যাডিয়েন্ট স্কুলের সভাপতি কাজী মাওলানা মফিজুল ইসলাম, পূর্ব হাজীনগর জামে মসজিদের সভাপতি হাজী নুরুল ইসলাম হাওলাদার, মো. লিটন মেম্বার, মো. মিলন খন্দকার, মো. সোলায়মান হোসেন সুমন, মো. মনির হোসেন রমনা প্রমুখ। অন্যদিকে, ডেমরার সারুলিয়ায় গলাকাটা ব্রিজের পশ্চিম পার্শ্বেও রাস্তার উপর ময়লা ফেলা হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এতে করে ওই রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। একই সাথে ময়লার দুর্গন্ধে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।