Inqilab Logo

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মৃত্যু ও বহিষ্কার নিয়ে সংকটে ঈশ্বরগঞ্জ আওয়ামীলীগ

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৫:০৯ পিএম

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগে মৃত্যু ও বহিষ্কার নিয়ে সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদকসহ দশ নেতার মৃত্যু হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পদের শূন্যতার মাঝে শীর্ষস্থানীয় তিন আওয়ামী লীগ নেতাকে 'বহিষ্কার' করা হয়েছে। একটি অংশের আধিপত্য বজায় রাখা ও আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে প্রভাবিত করতে কৌশলে এমনটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বহিস্কৃত নেতারা।

জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের ২০০৩ সালে ৬৭ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটিতে সভাপতি হয়েছিলেন সাবেক এমপি আব্দুছ ছাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন আব্দুল হাকিম। ২০১৫ সালের দিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হওয়ায় আব্দুছ ছাত্তার উপজেলা আ'লীগের সভাপতির পদ ছাড়তে হয়। পরে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সভাপতির দায়িত্ব পান সিনিয়র সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুল। গত ২২ জানুয়ারি (২০২১) মারা যান উপজেলা আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম। তিনি ছাড়াও গত সতেরো বছরে কমিটির আরও নয়জন নেতার মৃত্যু হয়েছে। একজন প্রবাসী থাকায় কমিটির সদস্য দাঁড়িয়েছে ৫৬।


সাধারণ সম্পাদকের মৃত্যুর পর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পাওয়ার কথা। কিন্তু গত ৩০ শে জানুয়ারি পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ২৬ জানুয়ারি কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ও বজলুর রহমানকে বহিস্কার করা হয়েছে এবং কমিটির সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম, আ'লীগের সদস্য বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস ছাত্তারকে বহিস্কার করা হয়।
গত ২৮ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমনকেও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ তুলে দলের সদস্যপদ থেকে বহিস্কার করা হয়। এসব বহিস্কারের চিঠি ইস্যু করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ।

জয়নাল আবেদীন বলেন ষড়যন্ত্র করে ভুল বুঝিয়ে এমন চিঠি ইস্যু করা হয়েছে সাধারণ সম্পাদকের মৃত্যুতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীনের ওপর দায়িত্ব বর্তানোর সম্ভাবনা ছিল বেশি। তিনি যেন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব না পান, সে জন্য তার বিরুদ্ধে এমন ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন বহিস্কার করার এখতিয়ার জেলা আওয়ামী লীগের নেই। এটি কেন্দ্রের এখতিয়ার।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান বলেন, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তারা 'প্রতীক' বাণিজ্যে কাঁটা হতে পারেন- সে কারণে জেলা নেতাদের প্রলুব্ধ করে এমনটি করা হয়েছে। তারা দলীয় প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করছিলেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমন বলেন, জনপ্রতিনিধি হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেননি। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার নামে বহিস্কারের চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।

উপজেলা আ'লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করায় ২০ জনের নাম পাঠানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আপাতত কেন্দ্রকে জানিয়ে একজন সদস্য দিয়ে সাধারণ সম্পাদকের কাজ চালানো হচ্ছে। পরে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত কেউ পদে যেতে পারবে না। দলের প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করায় কেন্দ্রীয় ফোরামের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদেরকে বহিস্কার করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ