পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ.টি.এম. রফিক, খুলনা থেকে : খুলনা মহানগরীতে মাদ্রাসার দুই শিক্ষক ও একজন ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রিকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিচয়ে আটক করে নিয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহেও সন্ধান মেলেনি। ফলে গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজন। তবে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জরা (ওসি)। এমন ঘটনায় শুধু নিখোঁজদের পরিবার নয়; আতঙ্কিত পুরো মহানগরবাসীও। ইতোমধ্যে তাদের খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরেরও জোর দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে খুলনার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ। পরিবার ও পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ মে সাদা মাইক্রোবাসে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় খালিশপুরের বয়রা সিএসবি গোডাউনের নিরাপত্তা কর্মী মাকসুদুর রহমানের ছেলে মোঃ মনিরুল ইসলাম (২৮) এবং হরিণটানার থানা এলাকার বিসমিল্লাহ নগর মাদরাসার এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের শিক্ষক মোঃ আব্দুল্লাহ আল সায়েম তুর্য (২৫) ও একই মাদ্রাসার শিক্ষক সোয়াইবুর রহমান (২৬)-কে। এসব ঘটনায় খালিশপুর থানায় পৃথক দু’টি জিডি এবং হরিণটানা থানায় অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের পিতা।
নিখোঁজ ইলেক্ট্রিকশিয়ান মনিরুল ইসলামের পিতা মাকসুদুর রহমান বলেন, ১২ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিএসডি গোডাউনের সহকর্মী নিরাপত্তা প্রহরী মনিরকে কয়েকজন লোক আমাদের আত্মীয় পরিচয়ে বাড়িতে আসেন। এসে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৮ থেকে ১০ জন লোক মনিরুল ইসলামকে তুলে নিয়ে যায়। কি অভিযোগে তারা মনিরুলকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে তা জানতে চাইলেও তারা কোন উত্তর দেননি। ডিবি পরিচয়দানকারীদের দু’জনের হাতে ওয়্যারলেস ও তাদের প্রত্যেকের কাছে পিস্তল ছিল বলে জানান মাকসুদুর রহমান। যাওয়ার সময় তারা খালিশপুর থানায় গিয়ে খোঁজ নিতে বলেছিলেন। পরে থানায় গিয়ে শুনি তারা কিছুই জানেন না।
অপরদিকে, একই দিন বৈকালী এলাকা থেকে হরিণটানার বিসমিল্লাহ নগর মাদরাসায় যাওয়ার পথে সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় শিক্ষক সোয়াইবুর রহমানকে। এ ঘটনায় খালিশপুর থানায় জিডি করেছেন তার পিতা বৈকালী বাজারস্থ বায়তুন নাজাত জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুস সাত্তার।
তিনি বলেন, আমার ছেলের কোন শত্রু থাকতে পারে না। কোনদিন সে কোন রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিল না। আল্লাহ জানেন, এখন কোথায় আছে? কেমন আছে? আদৌ.......? সন্তানহারা পিতার আর্তনাদে এখানেই বন্ধ হয়ে গেল কথা। নিখোঁজ সোইয়াবুর রহমানের সন্তান-সম্ভাবা স্ত্রী ফারজানা সুলতানাও বাকরুদ্ধ।
নিখোঁজ আব্দুল্লাহ আল সায়েম তুর্যের পিতা শহিদুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার (১২ মে) বিকেলে মাদরাসা থেকে বাইপাস দিয়ে পিএমজি অফিসের পিছনের বাসায় ফিরছিল বাবা আমার। আরেকজন শিক্ষক মুফতি হাফিজুর রহমানও তার সাথে বাইসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন। বাইপাসে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস তাদের গতিরোধ করে প্রত্যেকের নাম শোনেন এবং তুর্যকে গাড়ীতে তুলে নেন। এ সময় মুফতি হাফিজুর রহমান মোবাইল করে ঘটনাটি মাদরাসার অধ্যক্ষকে জানাতে চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন দু’টি ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় তারা।
এ ব্যাপারে হরিণটানা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, নগরীর মোস্ত’র অদূরে মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল সায়েমকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে একটি মামলা করেন তার পিতা। এখনো কোন খোঁজ-খবর পাওয়া যায়নি। তদন্ত ও অভিযান চলছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি) মোঃ কামরুল ইসলাম বলেছেন, ডিবি পরিচয়ে গত বৃহস্পতিবার (১২ মে) কাউকে তুলে আনা হয়নি। তাদের উদ্ধারে কাজ করছে ডিবি পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে এ তিন যুবক অপহরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন।
অপহৃত তিন যুবকের সন্ধান দাবি খুলনা মহানগর বিএনপির ঃ সাদা পোশাক পরিহিতদের দ্বারা অপহরণের শিকার তিন যুবকের সন্ধান না পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খুলনা মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। অবিলম্বে তাদের খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরেরও জোর দাবি জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।