পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির একটি ভুল সিদ্ধান্তের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তার সারাজীবনের অর্জনকে কেড়ে নিতে চায়। এটা সঠিক হয়নি।’ বাংলাদেশে সফররত ভারতীয় একদল সাংবাদিকদের কাছে শনিবার দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাতকারে তিনি আসন্ন সংসদ নির্বাচন, সরকার গঠন, তার দলের অর্জন ও বিরোধীদের অবস্থান তিস্তা চুক্তি, সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
সু চির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অং সান সুচি সর্বত্রই সমালোচিত ও নিন্দিত হচ্ছেন। এটা দুঃখ জনক। এটা ঠিক, তিনি আরও ভাল করতে পারতেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, তিনি একাই কয়েক দশক ধরে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তাদের গণতন্ত্র এখনও বিকাশমান। তাই তার একার জন্য সম্ভবত এ বিষয়ে কিছু করতে পারা কঠিন।’
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের জনগণকে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দিয়ে সহায়তা করেছিল ভারত। এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে সহায়তা করেছি আমরা। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা বিবাদ চাই না। তবে আমরা তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি। তাদেরকে (রোহিঙ্গা) ফেরত নেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে তারা। কিন্তু আমি তাদেরকে এজন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে বলেছি। রোহিঙ্গারা চিরদিন আশ্রয়শিবিরে থাকতে পারে না। তারা অপব্যবহৃত হতে পারে। মিয়ানমারকে সমর্থন করছে ভারত ও চীন। কিন্তু আমরাও ভারতের একটু বেশি সাহায্য চাই।’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের অর্জন বিষয়ে বলেন, ‘আমি আশা করি আবার সরকার গঠন করতে পারবো। আমরা কিছু ভাল কাজ করেছি। বেশ কিছু বড় প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার পথে। আমি বিশ্বাস করি, আমি ক্ষমতায় ফিরলে তাতে বাংলাদেশের উত্থানে সুবিধা হবে। এখন আমাদের জাতীয় প্রবৃদ্ধি শতকরা ৭.৮৬ ভাগ। তবে আমরা মুদ্রাস্ফীতি শতকরা ৫ ভাগের সামান্য বেশিতে ধরে রাখতে সফল হয়েছি। এটা একটা অর্জন। তিনি বলেন, পদ্মাসেতুর মতো বড় বড় প্রকল্প আছে, যা আমরা সম্পন্ন করতে চাই। এ জন্য বিশ্বব্যাংক আমাদেরকে ঋণ বাতিল করে দেয়ার পর এ প্রকল্প নিজেরাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পদ্মাসেতুর কাজ শেষ হলে তা থেকে জাতীয় প্রবৃদ্ধি শমকরা ১.২ ভাগ যোগ হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী ও দেশের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করতে চাই আমরা ২০২১ সালে। ক্ষমতায় না ফিরলে আমি মনে করি, বাংলাদেশ সৌভাগ্যে হারাতে দেখবে।’
নির্বাচন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচনকে আমি রাজনৈতিক সফলতা হিসেবে দেখি। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমি কথা বলেছি এবং তাদেরকে আস্থায় এনেছি। আমি আগেও বলেছি, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকা উচিত। কিন্তু তারা আমার কথা শোনে নি। তারা ভেবেছিল, নির্বাচন থামিয়ে দিতে পারবে। গত নির্বাচনে তারা যা করেছে তা ছিল ভয়াবহ। তারা বোমা ছুঁড়েছে। ৩৯০০ টি গাড়ি পুড়িয়েছে। মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু আমি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি এবং তাদের সাহায্যে জিতেছি। এবারও আমরা প্রস্তুত আছি। তারা ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে। তারা আমাকে লিখেছিল যে, আমার সঙ্গে বসতে চায় না। আমি মেনে নিয়েছি।’
বিরোধীদের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় বিএনপির সঙ্গে যুক্ত আছে জামায়াতে ইসলামী। আমি বিশ্বাস করি না যে, মানুষ তাদের আদর্শকে গ্রহণ করবে। কিন্তু এটাই তাদের জোট। তারা মনোনয়ন নিলামে বিক্রি করেছে, যেন তারা জাতিকেই নিলামে তুলছে। এভাবেই তারা সব করতে চায়। আমাদের দিক থেকে, নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’
সন্ত্রাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাÐ হতে দিতে পারিনা। কারণ, আমি জানি যদি আমরা এটি প্রশ্রয় দেই, আমাদের দেশও ভুগবে। আমি বিশ্বাস করি শান্তি ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব না।’
সার্ক ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক সহযোগিতাকে মূল্যায়ন করি আমরা। কিন্তু আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা ক্ষমতায় থাকার সময়ে তারা (পাকিস্তান) আমাদের বিরুদ্ধে কর্মকান্ড চালানোর চেষ্টা করেছে, সন্ত্রাসকে উস্কে দেয়ার জন্য। এখন পাকিস্তানের অবস্থা দেখেন আপনারা। এক দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে আরেক দেশের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।
তিস্তা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের (ভারতে) গণতন্ত্র অব্যাহত আছে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুধু এর মাধ্যমেই জনগণের জন্য কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়। সম্ভবত তিস্তা চুক্তি করতে না করার পেছনে তাদের (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নিজস্ব কারণ রয়েছে। আমাদের ভূপ্রকৃতিই এমন। এখন আমরা নদীগুলো ড্রেজিং করার পরিকল্পনা নিয়েছি, যাতে বেশি পানি ধরে রাখা যায়। (ভারতের) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি পরামর্শ দিয়েছি যে, তাদেরও নদী খনন করা উচিত। আমাদের যৌথ নদী কমিশন যেহেতু কাজ করে যাচ্ছে, তাই অভিন্ন নদীগুলো আমরা যৌথভাবে ড্রেজিং করতে পারি। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।