বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালীর ৬টি আসনে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে নৌকা মার্কা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। পক্ষান্তরে হামলা, মামলা, পুলিশের আটকের ভয়ে দিশেহারা বিএনপি। জেলার ৬টি আসনের প্রতিটি পাড়া মহল্লায় নৌকা মার্কা প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারণা চলছে বিরামহীনভাবে। অপরদিকে নির্বাচনী প্রচারণা দূরের কথা প্রার্থী নিজে ও তার সমর্থকদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে সুখে নেই ধানেরশীল প্রার্থী ও সমর্থকরা। এযাবত কয়েকটি স্থানে ধানেরশীষ প্রার্থী হামলার শিকার হন। এরমধ্যে নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ি একাংশ) আসনের বিএনপি প্রার্থী ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন শনিবার তার নির্বাচনী এলাকার সোনাইমুড়ি প্রধান সড়কে গুলিবিদ্ধ হন।
নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে বিএনপি প্রার্থী ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ নিজ বাসভবনে অবরুদ্ধ রয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানেিয়ছেন। তিনি আরো জানান, নির্বাচনী প্রচারণা দূরের কথা আমি নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত। হামলা ও মামলা দিয়ে আমার আমার কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। কবিরহাট বাজারে আমার ধানেরশীষের সমর্থনে পথসভায় হামলা চালিয়ে ভন্ডুল করা হয়েছে। হামলায় ৩০জন নেতাকর্মীকে মারাতœক আহত করা হয়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি, দোকানপাট ও দলীয় অফিস ভাঙ্গচুর হয়। কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট আসনের কোথাও ধানের শীর্ষ মার্কার নির্বাচনী অফিস এমনকি পোস্টার পর্য্যন্ত নেই। এভাবে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর নির্বাচণী প্রচারণাকে জিম্মি করে রাখার নজীর কোথাও নেই।
নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর)আসনের এওজবালিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় যুবলীগের এক স্থানীয় নেতা নিহত হয়। পরে আওয়ামীলীগ প্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরী বিচক্ষণতার সাথে পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দেন। উক্ত ঘটনায় বিএনপি’র ৩৬৪ নেতাকর্মী ও অজ্ঞাত সংখ্যককে আসামী করে সুধারাম থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ ইতিমধ্যে ১০জনকে আটক করেছে। এ আসনে ধনেরশীষ মার্কার প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান অভিযোগ করেন, তিনি ও তার নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রচারনায় প্রতিনিয়ত বাধার সন্মুর্খীন হচ্ছে। রাতের বেলায় পুলিশ বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশী চালাচ্ছে। মাইকিং পোস্টারিং নেই বললেই চলে। সীমিত পরিসরে নির্বাচনী গণসংযোগকালে যোগদেয়া স্থানীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে রাতে পুলিম তল্লাশী চালাচ্ছে। আমার নির্বাচনী এলাকার র্সবর্ণচরের কোথাও নির্বাচনী অফিস কিংবা পোস্টার নেই। এতে করে ধানেরশীষ প্রচারণা ব্যহত হচ্ছে অন্যদিকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমর্থক এলাকা ত্যাগ করেছে। তিনি এসব বিষয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং অফিসার এবং পুলিশ সুপারকে অবহিত করলেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে জানান।
গত বৃহস্পতিবার হাতিয়া চানন্দী ইউনিয়নের দরবেশবাজারে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের বিএনপি’র প্রার্থী প্রকৌশলী ফজলুল আজিমের গাড়ি বহরে দূর্ব্যত্তরা হামলা চালিয়ে ৮টি গাড়ি ভাঙ্গচুর করে। হামলায় ১০জন আহত হয়েছে। সোমবার রাতে প্রকৌশলী ফজলুল আজিম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন যে, আমাকে জিম্মী করে রাখা হয়েছে। আমি বাসা থেকে বের হতে পারছিনা। কোথাও প্রচার প্রচারণা নেই। আমার বাসভবনের সন্মুখ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত নৌকা মার্কার মিছিল চলছে। মাইকের সাউন্ড বৃদ্ধি করে উস্কানীমূলক শ্লোগান দেয়া হচ্ছে। এদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যাতে করে আমার কর্মী সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে তাদের মিছিলে হামলা করে। এতে করে তারা মামলা দিয়ে আমার লোকজনকে এলাকাছাড়া করবে। কিন্তু আমার কর্মী সমর্থকরা তাদের পাতা ফাঁদে পা দিবেনা। আমি সুষ্ঠ পরিবেশ চাই। যাতে নিরাপদভাবে প্রচারণা চালাতে পারি।
গত রবিবার সকালে নোয়াখালী-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী জয়নুল আবদীন ফারুকের নির্বাচনী গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে সেনবাগ উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৬জন আহত হয়। হামলায় তার প্রচারগাড়ি ভাঙ্গচুর করা হয়। জয়নুল আবদীন ফারুক সাংবাদিকের জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহাকারী রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর মুহুর্তে হঠাৎ একজন সন্ত্রাসী অতর্কিতে গাড়িতে হামলা চারায়। তিনি আরো বলেন, নৌকা মার্কা প্রার্থী প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করলেও উপজেলা প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।
নোয়াখালীর ৬টি আসনে ধানেরশীষ প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারনায় পদে পদে ঝুঁকির অভিযোগ করেছে প্রার্থীরা। ফলে স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠছে বলে তাদের অভিযোগ। বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত ধানেরশীষ প্রার্থীরা সমস্যার সন্মুর্খীন হচ্ছে। গত শনিবার ধানেরশীষের ৬জন প্রার্থী যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিষ্টার মওদুদ অভিযোগ করেন, হাজারো প্রতিবন্ধকতা সত্বেও আমরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। দূ:খজনক হলেও সত্য যে, সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে আগেকার ক্রুসেড তীব্রতর করেছে। আমার নির্বাচনী এলাকায় আমি অবরুদ্ধ। অথচ একজন মন্ত্রী সরকারী সূযোগ সুবিধা গ্রহন করে রাজকীয়ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটা তো হতে পারেনা। গণতান্ত্রিক দেশে সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত থাকা উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।