Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সত্যালোকের সন্ধানে - মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কবর দেশে জীবিত আছেন

প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ, কে, এম, ফজলুর রহমান মুন্্শী
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
৫৪। ইরশাদ হয়েছে : ফলে আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা ভোগ করালেন এবং আখেরাতের শাস্তি তো কঠিনতর। (সূরা যুমার : আয়াত ২৬, রুকু-৩)।
৫৫। ইরশাদ হয়েছে : হে আমার সম্প্রদায়! এই পার্থিব জীবন তো অস্থায়ী উপভোগের বস্তু এবং আখিরাতই হচ্ছে চিরস্থায়ী-আবাস। (সূরা মুমিন বা গাফির : আয়াত ৩৯, রুকু-৫)।
৫৬। ইরশাদ হয়েছে : নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদেরকে ও মুমিনদেরকে পার্থিব জীবনে সাহায্য করব এবং যেদিন সাক্ষীগণ দ-ায়মান হবে। (সূরা মুমিন বা গাফির, আয়াত ৫১, রুকু-৬)।
৫৭। ইরশাদ হয়েছে : তার পর আমি তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করার জন্য অশুভ দিনে ঝঞ্ঝা বায়ু প্রেরণ করলাম। (সূরা হা-মীম-আস্্ সাজদা, আয়াত ১৬, রুকু-২)।
৫৮। ইরশাদ হয়েছে : আমরাই তোমাদের বন্ধু দুনিয়ার জীবনে এবং আখেরাতের জীবনে...। (সূরা হা-মীম-আস্্ সাজদা : আয়াত ৩১, রুকু-৩)।
৫৯। ইরশাদ হয়েছে : বস্তুত তোমাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে তা পার্থিব জীবনের ভোগ...। (সূরা শূরা : আয়াত ৩৬, রুকু-৪)।
৬০। ইরশাদ হয়েছে : আমিই তাদের পার্থিব জীবনে তাদের মধ্যে জীবিকা বণ্টন করি...। (সূরা মুখরুক : আয়াত ৩২, রুকু-৩)।
৬১। ইরশাদ হয়েছে : এবং (বিশ্রামের জন্য) স্বর্ণের নির্মিত (পালঙ্কও দিতাম)। আর এসবই তো শুধু পার্থিব জীবনের ভোগসম্ভার। (সূরা মুখরুফ : আয়াত ৩৫, রুকু-৩)।
৬২। ইরশাদ হয়েছে : ইহা এ জন্য যে তোমরা আল্লাহর নির্দশনাবলিকে বিদ্রƒপ করেছিলে এবং পার্থিব জীবন তোমাদেরকে প্রতারিত করেছিল। (সূরা জাছিয়া : আয়াত ৩৫, রুকু-৪)।
৬৩। ইরশাদ হয়েছে : পার্থিব জীবন তো কেবল ক্রীড়া কৌতুক, যদি তোমরা ঈমান আন, তাকওয়া অবলম্বন কর, আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের পুরস্কার দেবেন। (সূরা মুহাম্মাদ : আয়াত ৩৬, রুকু-৪)।
৬৪। ইরশাদ হয়েছে : অতএব যে আমার স্মরণে বিমুখ তাকে উপেক্ষা করে চল, সে তো কেবল পার্থিব জীবনই কামনা করে। (সূরা আন্নাজম : আয়াত ২৯, রুকু-২)।
৬৫। ইরশাদ হয়েছে : তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক শ্লাখা ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা...। (সূরা-হাদীদ : আয়াত ২০, রুকু-২)
৬৬। ইরশাদ হয়েছে : পার্থিব জীবন তো ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়। (সূরা হাদীদ : আয়াত ২০, রুকু-২)।
৬৭। ইরশাদ হয়েছে : যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য-কে তোমাদের মধ্যে সৎ কর্মে-উত্তম? (সূরা মূলক : আয়াত ২, রুকু-১)।
৬৮। ইরশাদ হয়েছে : অনন্তর যে সীমা লংঘন করে এবং পার্থিব জীবনকে বেছে নেয়, জাহান্নামই হবে তার আবাস। (সূরা নাযিয়াত : আয়াত ৩৭, ৩৮, ৩৯, রুকু-২)।
৬৯। ইরশাদ হয়েছে : কিন্তু তোমরা পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দাও, অথচ আখিরাতই উৎকৃষ্টতর ও স্থায়ী। (সূরা আ’লা : আয়াত ১৬, ১৭, রুকু-১)।
আর হায়াত শব্দটি সম্বন্ধে পদ (হায়াতিকুম) রূপে আল কোরআনে একবার এসেছে। যথা :
৭০। ইরশাদ হয়েছে : যেদিন কাফেরদেরকে জাহান্নামের সন্নিকটে উপস্থিত করা হবে, সেদিন তাদেরকে বলা হবে তোমরা তো পার্থিব জীবনে সুখ-সম্ভার ভোগ করে নিঃশেষ করেছ...। (সূরা-আহকাফ : আয়াত ২০, রুকু-২)।
আর হায়াত শব্দটি সম্বন্ধ পদ হায়াতুনা রূপে আল কোরআনে তিনবার এসেছে। যথা :
৭১। ইরশাদ হয়েছে : তারা বলে, আমাদের পার্থিব জীবনই একমাত্র জীবন এবং আমরা পুনরুত্থিত হব না। (সূরা আনয়াম : আয়াত ২৯, রুকু-৩)।
৭২। ইরশাদ হয়েছে : একমাত্র পার্থিব জীবনই আমাদের জীবন, আমরা মরিবাঁচি এখানেই এবং আমরা পুনরুত্থিত হব না। (সূরা মুমিনুন : আয়াত ৩৭, রুকু-৩)।
৭৩। ইরশাদ হয়েছে : তারা বলে, একমাত্র পার্থিব জীবনই আমাদের জীবন, আমরা মরি ও বাঁচি, আর সময় বা কালই আমাদেরকে ধ্বংস করে। (সূরা জাছিয়া : আয়াত ২৪, রুকু-৩)।
আর হায়াত শব্দটি সম্বন্ধপদ লিহায়াতি রূপে আল কোরআনে একবার এসেছে। যথা :
৭৪। ইরশাদ হয়েছে : সে বলবে, হায়! আমার এ জীবনের জন্য আমি যদি কিছু অগ্রিম পাঠাতাম? (সূরা ফাজর : আয়াত ২৪, রুকু-১)।
আর হায়াত শব্দটি সুনির্দিষ্ট ও প্রকৃত অর্থ জ্ঞাপনার্থে আলহায়াওয়াল রূপে আল কোরআনে একবার এসেছে। যথা :
৭৫। ইরশাদ হয়েছে : এই পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া কৌতুক ছাড়া কিছুই নয়। পারলৌকিক জীবনই তো প্রকৃত জীবন, যদি তারা জানত! (সূরা আনকাবুত : আয়াত ৬৪, রুকু-৭)। এই আয়াতে কারীমায় পার্থিব জীবন ও পারলৌকিক জীবন এই উভয় জীবনের কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে এবং এ কথাও বলা হয়েছে যে, পারলৌকিক জীবনই হচ্ছে আসল জীবন। সুতরাং আসল জীবনে হাবীবে কিবরিয়া মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) জীবিত আছেন এবং থাকবেন, এটাই সত্য এটাই শাশ্বত। এর কোনো ব্যত্যয় হবার নয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আমরা এ পর্যন্ত দুনিয়ার হায়াত এবং আখেরাতের হায়াতের ইজমালী বিবরণ যা কোরআনুল কারীমে বিবৃত হয়েছে তা সহৃদয় পাঠক ও পাঠিকাগণের সামনে উপস্থাপন করেছি। এরই মধ্যে নূরানী জীবন ও রূহানী জীবন সম্পর্কে আলোকপাত করার বিষয়ে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের পরামর্শের আলোকে নি¤েœ আমরা নূরানী জীবন ও রূহানী জীবনের হাকিকত কোরআনুল কারীমের সে সকল আয়াতে বিবৃত হয়েছে তন্মধ্য হতে চয়নকৃত কিছু আয়াত নি¤েœ পরিবেশন করা হলো।
১। ইরশাদ হয়েছে : (ঐ সময়ের কথা) স্মরণ কর যখন আল্লাহপাক নবীদের নিকট হতে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়েছি তার শপথ! আর তোমাদের কাছে যা আছে তার সমর্থকরূপে যখন একজন রাসূল আসবে তখন নিশ্চয় তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করবে এবং তাঁকে সাহায্য করবে। তিনি বললেন, তোমরা কি স্বীকার করলে? এবং এই সম্পর্কে আমার অঙ্গীকার কি তোমরা গ্রহণ করলে? তারা বলল, আমরা স্বীকার করলাম। তিনি বললেন, তবে তোমরা সাক্ষী থাক, আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ৮১, রুকু-৯)।
২। ইরশাদ হয়েছে : (ঐ সময়ের কথা) স্মরণ কর, যখন আমি নবীদের নিকট হতে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম এবং তোমার নিকট হতেও এবং নূহ, ইবরাহীম, মূসা, মারয়াম-তনয় ঈসার নিকট হতে তাদের নিকট হতে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম। (সূরা আহযাব : আয়াত ৭, রুকু ১)।
৩। ইরশাদ হয়েছে : (ঐ সময়ের কথা) স্মরণ কর, যখন তোমার প্রতিপালক আদম সন্তানের পৃষ্ঠ হতে তার বংশধরকে বের করেন এবং তাদের নিজেদের সম্বন্ধে স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেন এবং বলেন, আমি কি তোমাদের প্রতিপালক নই?
তারা বলল, নিশ্চয়ই; আমরা সাক্ষী রইলাম। এই স্বীকৃতি গ্রহণ এ জন্য যে, তোমরা কিয়ামতের দিন যেন না বল, আমরা তো এ বিষয়ে গাফিল ছিলাম। (সূরা আ’রাফ : আয়াত ১৭২, রুকু-২২)।
৪। ইরশাদ হচ্ছে : আল্লাহর নিকট হতে এক নূর জ্যোতি এবং স্পষ্ট কিতাব তোমাদের নিকট এসেছে। এর দ্বারা আল্লাহপাক তাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে চায় এবং স্বীয় অনুমতিক্রমে তাদেরকে অন্ধকার হতে বের করে নূর বা জ্যোতির দিকে নিয়ে যান এবং তাদেরকে সরলপথে পরিচালিত করেন। (সূরা মায়িদাহ : আয়াত ১৫, ১৬, রুকু-৩)।
৫। ইরশাদ হয়েছে : হে নবী! আমি তো তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষীরূপে এবং সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে। আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারী রূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ (সিরাজুম মুনীর) রূপে। তুমি মুমিনদেরকে সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য আল্লাহর নিকট মহাঅনুগ্রহ রয়েছে। (সূরা আহযাব : আয়াত ৪৫, ৪৬, ৪৭, রুকু-৬)।
এই পরিসরে ১ হতে ৫নং আয়াতে কারীমায় নূরানী জীবন ও রূহানী জীবনের সম্যক পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে এবং নূরানী-জীবনের গতিময়তা ও রূহানী জীবনের অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। (অসমাপ্ত)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সত্যালোকের সন্ধানে - মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কবর দেশে জীবিত আছেন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ