Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নিহতের সংখ্যা ১৮০ হওয়ার আশঙ্কা বিবিসির

দৌমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সিরিয়ার পূর্ব গৌতার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সর্বশেষ শহর দৌমায় রাসায়নিক হামলায় একজন মুখপাত্রের উদ্বৃতি দিয়ে বিবিসি জানিয়েছেন সরেজমিন অনুসন্ধান থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে অন্তত ১৮০ জন মারা গেছে। তবে অন্তত ৭০ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকর্মীদের সংগঠন হোয়াইট হেলমেট। তবে কতজন নিহত হয়েছেন ও ঠিক কি হয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত জানা যাচ্ছে না। তবে ক্রমাগত বোমাবর্ষণের কারণে এই সংখ্যা নিশ্চিতভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এদিকে, স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকারী সংস্থা ‹হোয়াইট হেলমেট› একটি বেজমেন্টে লাশের ছবিসহ একটি টুইট করে। এর আগে করা এক টুইটে হোয়াইট হেলমেট দাবি করেছিল মৃতের সংখ্যা ১৫০ জন। পরে ওই টুইটটি এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায় বিবিসি। তবে এখন তারা দৌমায় নিহতের সংখ্যা দেড়শতাধিক বলেছে। সরকার বিরোধী গৌতা মিডিয়া সেন্টার থেকে এক টুইটে শ্বাসরোধ হয়ে ‘৭৫ জনের বেশি মানুষ’ নিহতের খবর দেওয়া হয়েছে। আরও প্রায় এক হাজার মানুষ শ্বাসকষ্টে ভুগছে বলেও জানায় তারা।
অন্যদিকে, সরকারি বাহিনী এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ বিদ্রোহী গোষ্ঠী জইশ আল ইসলামের। তাদের দাবি, হেলিকপ্টার থেকে ব্যারেল বোমা ফেলা হয়েছে। যেগুলোতে বিষাক্ত সারিন নার্ভ এজেন্ট ছিল। সিরিয়ায় সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ইউনিয়ন অব মেডিক্যাল রিলিফ অর্গানাইজেশন দেশটির একটি হাসপাতালের বরাত দিয়ে দৌমায় ৭০ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে।
এর আগে চিকিৎসা ত্রাণ সংগঠন সিরিয়ান আমেরিকান মেডিক্যাল সোসাইটি (এসএএমএস) দৌমায় রাসায়নিক হামলায় ৩৫ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিল। রাসায়নিক হামলা হয়েছে কিনা বা নিহতের প্রকৃত সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং বিবিসি।
সরকার বিরোধী ‹ঘুটা মিডিয়া সেন্টার› টুইট করেছে যে এক হাজারের বেশী মানুষ এই রাসায়নিক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা বলছে একটি পিপের মধ্যে করে হেলিকপ্টার থেকে ফেলা একটি বোমা ফেলা হয় সেখানে। ঐ পিপেতে বিষাক্ত রাসায়নিক সারিন ছিল বলে বলা হচ্ছে। পূর্ব ঘুটা অঞ্চলের একমাত্র বিদ্রোহী অধ্যূষিত শহর দৌমা বর্তমানে সরকারি বাহিনী অবরোধ করে রেখেছে।
এদিকে, সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিরিয়া সরকার রাসায়নিক হামলার এই অভিযোগকে ্রঅতিরঞ্জনগ্ধ উল্লেখ করে সরকারি বাহিনী দৌমায় কোনো রাসায়নিক হামলা চালায়নি বলে দাবি করেছে । তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, দৌমার বিদ্রোহীরা পতনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে এবং মিথ্যা সংবাদ ছড়াচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং দৌমায় রাসায়নিক গ্যাস ব্যবহার হলে তার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করা উচিত। গত ফেব্রুয়ারিতে অভিযান শুরুর পর সিরীয় বাহিনী পূর্ব গৌতার প্রায় সব এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে, বাকি আছে শুধু জইশ আল ইসলাম নিয়ন্ত্রিত দৌমা। বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য দৌমায় কয়েকদিন হামলা বন্ধ রেখেছিল সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। আলোচনার মাধ্যমে জইশ আল ইসলামের যোদ্ধারা দৌমা ছাড়তে রাজি না হওয়ায় গত শুক্রবার বিকাল থেকে সরকারি বাহিনীগুলো শহরটিতে ফের ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে। তবে সেটা রাসায়নিক হামলা ছিল কিনা তা নিশ্চিত হতে পারেননি বলে জানান অবজারভেটরির পরিচালক রামি আব্দুল রহমান।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে তারা সা¤প্রতিক আক্রমণ সম্পর্কে ্রখুবই পীড়াদায়কগ্ধ তথ্য পাচ্ছে। তারা আরও বলেছে রাসায়নিক হামলা ব্যবহার করা হয়ে থাকলে সিরিয়ার মিত্র হিসেবে যুদ্ধ করা রাশিয়াকে দায়ী করা উচিৎ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বলেছে, “নিজেদের লোকদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে নআক্রমণ করার ইতিহাস রয়েছে রাশিয়ার। অগণিত সিরিয়ানদের ওপর রাসায়নিক হামলা করার দায় নিতে হবে রাশিয়াকে।”
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এসএএমএস জানিয়েছে, একটি ক্লোরিন বোমা দৌমা হাসপাতালে আঘাত করেছে, এতে ছয় জন নিহত হয়েছেন। দ্বিতীয় আরেকটি হামলায় নার্ভ এজেন্টসহ ‘মিশ্র এজেন্ট’ ব্যবহার করা হয়েছে যেটি নিকটবর্তী ভবনগুলোতে আঘাত হেনেছে। এসএএমএসের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাসেলে টারমানিনি রয়টার্সকে জানিয়েছেন,
“আমরা জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও ইউরোপীয় সরকারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছি,” রাসায়নিক হামলায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জইশ আল ইসলামের রাজনৈতিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসএএনএ এক সরকারি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, দৌমার বিদ্রোহী গোষ্ঠী জইশ আল ইসলাম ‘রাসায়নিক হামলার মিথ্যা প্রচারণা ছড়িয়ে সিরিয়ান আরব আর্মির অগ্রগতি রুখতে ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে’। সূত্র: বিবিসি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আশঙ্কা বিবিসির
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ